ঢাকা: নারীদের `তেঁতুলের` সঙ্গে তুলনা করে নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তার বক্তব্য নিয়ে ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
বাংলানিউজের কাছেও নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।


অ্যাডভোকেট সালমা আলী আরও বলেন, শফীতো শুধু নারী নয়, পুরুষদেরও অপমান করেছে। আমি বুঝতে পারছি না, পুরুষরা কেন এর প্রতিবাদ করছে না, সেটাও এক প্রশ্ন আমার। প্রতিটি পুরুষকে সে লালসাময় ভাবে উপস্থাপন করেছে, কোনো পুরুষের কী এতে অপমানবোধ হয়নি?
নারীর চরিত্র নিয়ে বারবার হেফাজত এভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দল এবং মিডিয়ারও দোষ রয়েছে এতে আমি মনে করি। মিডিয়া কেন হেফাজত ও শফীকে এতো কাভারেজ দিচ্ছে? কোথাকার কোন শফী কি বললো, সেটা এতা ফলাও করে প্রচার করার কি আছে। নারী আজ তার যোগ্যতায়, দক্ষতায় এগিয়ে এসেছে, এগিয়ে যাবে, নারী কোন ভোগ্য পণ্য নয়
তিনি আরও বলেন, শফীর এ মন্তেব্যের প্রতিবাদে যদি রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এগিয়ে আসতো তাহলে হেফাজত একের পর এক এভাবে বলতে পারতো না। এই ধরনের কথায় আমরা পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের অর্জন রয়েছে অনেক। যুগে যুগে ধর্মীয় নেতা এসেছেন এখানে, কিন্তু সবসময় রাষ্ট্রীয়জীবন থেকে ধর্মকে পৃথক রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন যেভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দড়ি টানাটানি করছে ধর্মকে নিয়ে, সেটা কোনভাবেই ঠিক নয়। নারীর মর্যাদা, সম্মান কোনোভাবেই নষ্ট হবার নয়।


উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফেসবুক খুলে দেখা যায়, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী নারীদের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও চাকরি সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বক্তব্য দিচ্ছেন একটি ওয়াজ মাহফিলে। তার বক্তব্য সংবলিত একটি ভিডিও ফুটেজও আছে ফেসবুকে। ওয়াজে নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
আল্লামা শফী বলেন, `তেঁতুল দেখলে মানুষের যেমন জিভে জল আসে তেমনি নারীদের দেখলে দিলের মইধ্যে লালা বাইর হয়। ` নারীদের কাজের ক্ষেত্র প্রসঙ্গে আল্লামা শফী বলেন, `শোনো নারীরা, চার দেয়ালের ভেতরই তোমাদের থাকতে হবে। স্বামীর বাড়িতে বসে তোমরা আসবাবপত্র দেখভাল করবা, শিশু লালন-পালন, পুরুষ-শিশুদের যত্ন করবা। এই হলো তোমাদের কাজ। তোমাদের কেন বাইরে যেতে হবে?`
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে, দেশের চাকরিজীবী নারীর সংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ। মোট জনসংখ্যার তুলনায় আবার অর্ধেক নারী।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৩
জেএ/সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর;জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর