প্রথমে টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন এবং একপর্যায়ে চেতনানাশক ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যের আমন্ত্রণ জানানো। ওই ব্যক্তি রাজি হয়ে খাবার গ্রহণ করলেই মিশন সম্পন্ন অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের।
চা-পান, জুসসহ বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া এ চক্রের ৬২ জন সদস্যকে আটক করেছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা।
শুক্রবার (১৭ মে) থেকে শনিবার (১৮ মে) সকাল পর্যন্ত নিউমার্কেট, গুলিস্থান, জয়কালী মন্দির, ফকিরাপুল, কুড়িল বিশ্বরোড, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১৪৩ পিস নকটি (Nocti-5mg), নিটরাজিপাম (Nitrazepam-5mg), ১৮ পিস লেক্সোটানিল (Lexotanil (3mg), ২৮ পিস ইপিত্রা (Epitra) ১০ পিস সেডিল (Sedil) রিভোট্রিল (Rivotril-2mg), পেস-২ (Pase2), ডিজোপেন (Disopan), ক্লোনাজিপাম (Clonazepam-2mg), নিক্স (Nix), রাবিং বামের (Rubbing Balm) নীল রঙের কৌটা, ওষুধ মিশ্রিত জুস, খেজুর, সাতটি চোরাই মোবাইল ফোন ও একটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।
তিনি বলেন, অজ্ঞান করার পর সবকিছু কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত থাকেন না চক্রের সদস্যরা। কখনও ভিকটিমের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন থেকে স্বজনদের কাছে ফোন করে মুক্তিপণও দাবি করেন।
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমল, বাসস্ট্যান্ড, সদরঘাট, রেলস্টেশন এলাকায় আগত ব্যক্তিদের টার্গেট করে সখ্যতা স্থাপন করেন। এরপর তাদের অপর সদস্যরা ট্যাবলেট মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্য আমন্ত্রণ জানায়। টার্গেট করা ব্যক্তি রাজি হলে, ট্যাবলেট মিশ্রিত সেই খাদ্যদ্রব্য তাকে খাওয়ানো হয়। খাদ্য গ্রহণের পর অচেতন হলে তার মূল্যবান দ্রব্যাদি নিয়ে দ্রুত চলে যান।
এ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এক্ষেত্রে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে, চা, কফি, জুস, ডাবের পানি, পান, ক্রিম জাতীয় বিস্কুট, ব্যবহার করে থাকেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে অজ্ঞানপার্টি সদস্যদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য না থাকায় তারা আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় একই কাজ শুরু করেন।
কারণ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অজ্ঞানপার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করলেও পুলিশকে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করতে হয়। সেক্ষেত্রে মামলার ধারাগুলো দুর্বল হয়ে যায়। যদি ভুক্তভোগীদের কেউ বাদী হয়ে মামলা করতেন তবে এটি শক্ত হতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৯
পিএম/এএটি