ঢাকা, শনিবার, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় নতুন স্থাপনার হিড়িক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৫৫, মে ১৭, ২০১৯
সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় নতুন স্থাপনার হিড়িক সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় নতুন স্থাপনার হিড়িক। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: সৈয়দপুর বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। এ কারণে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন দেখা দেয়। অধিক লাভের আশায় একশ্রেণীর মানুষ রাতারাতি ঘরবাড়ি, খামার, বনায়ন করছেন। যতদূর চোখ যায় শুধু ঘর আর ঘর। সবই নতুন গড়ে ওঠা। 

নীলফামারী সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হচ্ছে। এজন্য নতুন করে ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে।

শুরু হয়েছে অবস্থান সম্পর্কিত ফিল্ডবুক তৈরির কাজ। এ অবস্থায় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, অধিগ্রহণের আওতায় থাকা জমিগুলো যে অবস্থায় রয়েছে সে অবস্থাতেই থাকবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? জমির মালিকরা অধিক লাভের আশায় বেসুমার ঘরবাড়ি তৈরি করছেন। গড়ে ওঠছে পশুপাখির খামার, পুকুর ও বনায়নও চলছে।

নীলফামারী জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য সৈয়দপুর ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডীতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বিমানবন্দরটির রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে সৈয়দপুর উপজেলা ৫৩৪ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি, সরকারি জমি ৬০ একর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৯ একর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৬ একর, সৈয়দপুর সেনানিবাসের প্রায় ১৪ একর ও খাস জমি ১৩ একর।  সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় নতুন স্থাপনার হিড়িক।  ছবি: বাংলানিউজএছাড়াও পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডী ইউনিয়নের ৩১৭ একর ব্যক্তি মালিকাধীন জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে। জমি কোথায় কি স্থাপনা রয়েছে, এর অবস্থান নির্ণয়ে ফিল্ডবুক তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনুর আলমের তত্ত্বাবধানে চলছে সার্ভে কার্যক্রম। এরই মধ্যে আওতাভুক্ত জমি যে অবস্থায় আছে, তা নিয়ে সন্নিবেশিত এলাকায় গত মাসে মাইকে প্রচার করা হয়েছে। যাতে এসব জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ, পুকুর খনন, গাছপালা রোপণ করা না হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, আওতাভুক্ত বাড়াইশালপাড়া, পশ্চিমপাড়া, পার্বতীপুরের বেলাইচন্ডী এলাকায় গড়ে ওঠছে শতশত বাড়িঘর। বনায়নও হচ্ছে। কেউ কেউ পশুর খামার, দইয়ের কারখানা ইত্যাদি তৈরি করছেন। অবকাঠামোগুলো দেখে মনে হয় এসব গত একমাসে তৈরি। কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিগ্রহণকরা জমিতে পাকা ঘরবাড়ি অন্যান্য স্থাপনা থাকলে ক্ষতিগ্রস্তরা পাবেন দ্বিগুণ অর্থ। পুকুর এবং গাছপালার জন্য আলাদাভাবে ক্ষতিগ্রস্তরা পাবেন টাকা। এ সুযোগটাই নিতে চাচ্ছেন এলাকাবাসী।  সৈয়দপুর বিমানবন্দর এলাকায় নতুন স্থাপনার হিড়িক।  ছবি: বাংলানিউজফিল্ডবুক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার। তিনি জানান,  আমরা মাইকে প্রচার করেছি। আওতাভুক্ত জমি যে অবস্থায় রয়েছে সেভাবেই থাকবে। যার উপর আমরা আর্থিক মূল্যায়ন করবো। কোনক্রমে নতুন তৈরি বাড়িঘর স্থাপনা তালিকাভুক্ত হবে না। এ নিয়ে আমরা জমির মালিকদের নিরুৎসাহিত করছি।

তিনি বলেন, ফিল্ডবুক তৈরির সময় আমরা পর্যবেক্ষণ করছি কেউ নতুন ঘরবাড়ি বানাচ্ছেন কিনা। নতুন বাড়িঘর গুলোতে আমরা চিহ্ন এঁকে দিচ্ছি। সবমিলিয়ে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম গোলাম কিবরিয়া বাংলানিউজকে জানান, নতুন গড়ে ওঠা ঘরবাড়ি স্থাপনা, পুকুর গাছপালা কোনক্রমে অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত হবে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫  ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।