ঢাকা, শনিবার, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ২৮ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার চান সুলতানা কামাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:২৬, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার চান সুলতানা কামাল মানববন্ধনে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাসহ সব ধরনের নারী নির্যাতনের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

এসময় অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, আমি আমার ৫০ বছরের মানবাধিকার রক্ষার জীবনে কতোবার যে প্রতিবাদের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছি, তার কোনো হিসেব নেই।

অধিকাংশ সময়ই নারী নির্যাতনের মতো ঘটনার জন্য রাস্তায় নেমেছি। একটি নাটকে যেমন পুনরাবৃত্তি  হয়, আমরাও আজ তেমন পুনরাবৃত্তির ফাঁদে পড়ে গেছি। কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা প্রতিবাদ করি। তারপর সেই বিচারের দাবি কোথায় যেনো হারিয়ে যায়। একদিন আমরাও ভুলে যাই। নুসরাত প্রাণ দিয়ে আবারও আমাদেরকে পথে নামিয়েছে।

নুসরাতকে বীর নারীদের একজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নুসরাতের মতো শত শত নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কেউ থানায় অভিযোগ করে না, প্রতিবাদও করেন না। কিন্তু নুসরাত অভিযোগ করেছে, প্রতিবাদ করেছে। তাই তাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। যেনো আর কেউ কোনোদিন নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে পারে না। কিন্তু নুসরাত কাপুরুষদের মনে ভয় ধরাতে পেরেছে। এজন্যই তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে পরিসংখ্যান আছে, শুধুমাত্র ২০১৮ সালে হাজারের উপরে নারী ধর্ষণ করা হয়েছে। ৬৫ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এই ৬৫ জনের বিচার আমরা কবে পাবো। আজকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলছি, তিনি চাইলে বিচার হবে, না চাইলে হবে না- এমন একটা পরিস্থিতিতে আমরা চলে এসেছি। তাহলে এই ৬৫ জনের পরিবার কি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাদের সন্তানের বিচার চাইতে পারবে, পারবে না। তারা কি বিচার পাবে? পাবে না, কারণ আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বসবাস করছি।

সুলতানা কামাল বলেন, নারী নির্যাতন সারা বিশ্বেই হয়। আমাদের দেশেও হয়। কিন্তু কেউ মুখ খুলে না। প্রতিবাদ করে না। আমরা প্রতিবাদ করে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে নির্যাতনকারীকে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করে নারী নিপীড়ন-নির্যাতন অনেকটাই কমাতে পারি।
  
সমাবেশ চলাকালীন সময়ে শত শত নারী গার্মেন্টস কর্মী প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে  এতে যোগ দেন।
 
জাতীয় যাদুঘরের সামনে মানববন্ধন শেষে সকলে মিছিলসহ শহীদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রা করেন এবং শহীদ মিনারে পৌঁছে মঙ্গলবারের সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, ছাত্র মৈত্রী, যুব মৈত্রী, হকার্স ফেডারেশন দক্ষিণ বাংলা নারী অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ৭১ সোসাইটি, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, নারী মুক্তি সংসদ, যৌন নির্যাতন ও নারী নিপীড়ন প্রতিরোধ আন্দোলনসহ আরও বেশ কিছু সংগঠন।

বাংলাদেশের সময়: ২১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
আরকেআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।