ঢাকা, বুধবার, ৫ ভাদ্র ১৪৩২, ২০ আগস্ট ২০২৫, ২৫ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

চাঁদপুরে গোপনে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৫০, এপ্রিল ৮, ২০১৯
চাঁদপুরে গোপনে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ! ইলিশের ‘বাড়ি’ খ্যাত চাঁদপুরের আড়তগুলোতে কোনো ইলিশ প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে না, আড়তে গিয়ে কোনো ক্রেতা ইলিশ চাইলে ওজন জেনে এনে দেওয়া হয়

চাঁদপুর: জাটকা রক্ষায় সরকার মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আসন্ন বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) উপলক্ষে বেশি মুনাফার আশায় এক শ্রেণীর বিক্রেতা গোপনে ইলিশ বিক্রি করছেন।

ইলিশের ‘বাড়ি’ খ্যাত চাঁদপুরের শহর কিংবা জেলার অন্য কোনো বাজারে প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না। চাহিদা থাকলেও আইনি ভয়ে ক্রেতারাও নিরব।

কারণ প্রতিনিয়ত বাজারগুলো মনিটরিং করছে জেলা ট্রাস্কফোর্স।

সোমবার (০৮ এপ্রিল) সকালে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য আড়ৎ বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে সবগুলো আড়তই ফাঁকা। কারণ ইলিশের আমদানি না থাকলে আড়তগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি থাকে না। শুধুমাত্র দুপুরে শরীয়তপুর জেলা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন জলাশয়ে চাষ হওয়া রুই, কাতল, তেলাপিয়া ও চিংড়ি আড়তে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন লোকজন। এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই এসব মাছ বিক্রি হয়ে যায়। এরপর আবার আড়তের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

মৎস্য ব্যবসায়ী হযরত আলী বাংলানিউজকে বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মান্য করেন। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গত কয়েক বছরই চাঁদপুরের ইলিশ ম্যানু থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসনসহ কোনো সংগঠনেই ইলিশের চাহিদা নেই। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা তা আমার জানা নেই।

এদিকে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা থেকে আসা ক্রেতা মো. মানিক জানান, মাছের আড়তে গিয়ে ইলিশ চাওয়া হলে ওজন জেনে এনে দেওয়া হয়। আমি ৫শ’ গ্রাম ওজনের ২ কেজি ইলিশ দেড় হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি।

মৎস্য ব্যবসায়ী ছিদ্দিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার আগে চাঁদপুরের নদীর ইলিশ ব্যবসায়ীদের সংরক্ষণ আছে। ওইসব ইলিশের দাম ৫শ’ গ্রাম প্রতি কেজি ৬শ’ টাকা, ৮শ’ গ্রাম ১ হাজার ৫০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬শ’ টাকা ও ১ কেজি ৭শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২শ’ টাকা। তবে কেউ কেউ মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত ইলিশ আরো কম দামে বিক্রি করেন।

চাঁদপুর মৎস্য বহুমুখী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি আব্দুল খালেক মাল বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুর মৎস্য আড়তে কোনো তাজা ইলিশ বিক্রি হয় না। কেউ যদি অর্ডার দেয়, তাহলে কোল্ড স্টোরেজ থেকে এনে আগে সংরক্ষণ করা ইলিশ সরবরাহ করা হয়।  

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুর মাছঘাটে গত কয়েকদিন আগে অভিযান চালানো হয়েছে। একটি আড়তে কিছু জাটকা পাওয়া গেছে। আর কোনোটিতেই ইলিশ পাওয়া যায়নি। কেউ গোপনে বিক্রি করে কিনা, তা আমার জানা নেই। তবে আমরা এখন আবার অভিযান পরিচালনা করবো।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদপুরে জাটকা সংরক্ষণের জন্য মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ইলিশ বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইলিশ বিক্রির কোনো সংবাদ পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবো। চাঁদপুরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে এই দুই মাস ইলিশ দিয়ে আপ্যায়ন বাদ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।