অননুমোদিত ছুটি ভোগ করায় ব্রুনাই দারুসসালামের বন্দরসেরী বেগওয়ান বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) জিলাল হোসেনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রথম সচিব (শ্রম) পদে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই থেকে কর্মরত থাকাকালে তিনি ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডে পাবলিক পলিসি প্রোগ্রামে পিএইচডি কোর্সে চার বছরের জন্য শিক্ষা ছুটির জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠান।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন যে, ‘বিবেচ্য ডক্টরেট প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই এবং পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে তার টিউশন ও অন্যান্য ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল ফান্ডিং থেকে নির্বাহ করা হবে’।
কিন্তু আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে ফান্ডিংয়ের বিষয়ে ভিন্নরূপ তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি অনুমোদিত ছুটি শেষ হওয়ার পর ২৫ জানুয়ারি থেকে নয় মাসের বেশি সময় বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগে রুজুকৃত ১৯/২০২৩ নম্বর বিভাগীয় মামলায় তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনীত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৭(৮) বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং একই বিধিমালার ৭(৯) বিধি মোতাবেক তাকে কেন ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ সূচক গুরুদণ্ড প্রদান করা হবে না এ মর্মে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়।
দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত এবং তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের বিপরীতে কোনো সন্তোষজনক বক্তব্য প্রদান করতে সক্ষম হননি বিধায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) (ঘ) বিধি অনুযায়ী গুরুদণ্ড হিসেবে ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ করার সিদ্ধান্ত হয় এবং প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে বিধি মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। কমিশন জিলাল হোসেনকে ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ নামীয় গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জিলাল হোসেনের বিরুদ্ধে রুজুকৃত এ বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন প্রস্তাবিত গুরুদণ্ডের সঙ্গে একমত পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪(৩) (ঘ) বিধি অনুযায়ী তাকে ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ নামীয় গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত এ বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন প্রস্তাবিত গুরুদণ্ডের সঙ্গে একমত পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪ (৩) (ঘ) বিধিমতে তাকে পলায়নের তারিখ অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ‘চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ’ নামীয় গুরুদণ্ড প্রদান করা হলো।
এমআইএইচ/আরআইএস