সোমবার (২ এপ্রিল) বেলা ১২টায় রাজশাহীর সপুরা এলাকায় ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় রাজশাহীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, রাজশাহীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ চালু হলে তা দেশের মধ্যে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য বিস্তারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্ক চলে আসছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের সম্পর্কের এখন সোনালি অধ্যায় চলছে। তাই আমাদের যৌথ সংস্কৃতি দিনকে দিন উন্নতি লাভ করছে’।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে। এটা ভারত আজও গর্বের সঙ্গে স্মরণ করে। দুঃসময়-সুসময় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অটুট থাকবে এটাই প্রত্যাশা।
এর আগে সকালে ভারতের অর্থায়নে ‘সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশ এবং প্রত্নতত্ত্ব অবকাঠামোর উন্নতি সাধন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে রাজশাহী মহানগরীর টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন তিনি।
ভারত সরকারের অনুদানে ২১ কোটি ৯৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় আছে- বিজিবি ক্যাম্প থেকে বিসিক ও উপ-শহর হয়ে সপুরা পর্যন্ত ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার সড়ক আধুনিকায়ন ও ফুটপাথ নির্মাণ, তালাইমারী এলাকায় ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় পদ্মা সাধারণ গ্রন্থাগার নির্মাণ, প্রাচীন মঠ-মন্দির সংস্কার, পদ্মা আবাসিক এলাকায় ‘পদ্মা পারিজাত পার্ক’ নির্মাণসহ কয়েকটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
ভারতীয় হাইকমিশনার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘গত বছর উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এত অল্প সময়ের মধ্যে কাজের অগ্রগতি দেখে আমি খুবই আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে রাজশাহীর মানুষের জীবন আরো উন্নত হবে বলে আমি মনে করছি। ’
ভারতীয় হাই কমিশনারের সঙ্গে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অভিজিত চট্টোপাধ্যায়, ফার্স্ট সেক্রেটারি নবনিতা চক্রবর্তী, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, প্রকল্প পরিদর্শন শেষে দুপুর ১টায় ভারতীয় হাইকমিশনার রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের বর্ধিত ভবনের উদ্বোধন ও জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাসহ জাদুঘরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহী সফরে যান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। ওই দিন তিনি রাজশাহী নগর ভবন পরিদর্শন করেন।
পরে তিনি ‘রাজশাহী শহর টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক এ সমঝোতা চুক্তি স্মারক সই করেন। সেই অনুযায়ী ভারত সরকার এ প্রকল্পের জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে (রাসিক) ২১ কোটি ৯৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে। এ সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানের পর রাসিকের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮
এসএস/ওএইচ/