পুলিশ হেডকোয়ার্টর্স ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের মাধ্যমে এ খবর নিশ্চিত হওয়া মাত্র অভিযান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। টানা কয়েক ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগেই শুক্রবার (৩০ মার্চ) ভোরে মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এসপি আলী আশরাফ বলেন, গ্রেফতার মোস্তাকিম বগুড়া শহরের খান্দার বিলেরপাড়া এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার কয়েকদিন আগে কাউন্সিলর মোস্তাকিমের নেতৃত্বে ৬-৭ জন যুবক পাসপোর্ট অফিসে যায়। এ সময় তারা শাহজাহান কবিরকে বেশ কয়েকটি পাসপোর্ট করে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে মোস্তাকিমসহ অন্যরা অফিস থেকে বের হয়ে যায়।
সেই ঘটনার জের ধরেই এডি শাহজাহানের ওপর সশস্ত্র হামলা করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাকিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়া হবে।
তিনি জানান, কাউন্সিলর মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আরও মামলা রয়েছে কী-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি মামলাগুলোর বর্তমান অবস্থা কি সেটাও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এসপি আলী আশরাফ আরও বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ৩ আসামিকে ও সন্দেহজনক একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন-শহরের মালগ্রাম এলাকার রমজান আলীর ছেলে হাসান আলী (৩৬), ঠনঠনিয়া হিন্দুপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে জীবন (২১), একই এলাকার আবু তালেবের ছেলে রাসেল মিয়া (৩০) ও মিলু। এদের মধ্যে একজন সরাসরি হামলায় অংশ নেয়। এজাহারভুক্ত অপর দু’জন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসপি আলী আশরাফ বলেন, অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সেক্ষেত্রে দলীয় পরিচয় বিবেচনা করা হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, সনাতন চক্রবর্তী, মকবুল হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে, বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারী শাজেনুর আলম বাদী হয়ে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) রাতে শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দুপুরে বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) শাহজাহান কবিরকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেল শাহজাহান কবিরকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
এমবিএইচ/আরআইএস/