শুক্রবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শুরু হয়। চলবে ১ এপ্রিল (রোববার) রাত পর্যন্ত।
সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজারো নারী পুরুষ মাজারে জড়ো হতে শুরু করেছে। এসব ভক্তরা তিনদিন অবস্থান করবে মাজারে। নিজের মনোবাসনা পূরণের আশায় স্রষ্টার আরাধনায় মগ্ন থাকবেন। এ তিনদিন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে লালন, মুর্শিদী ও ভাটিয়ালী গান পরিবেশন করবেন ভক্তরা। রাতভর লোকে লোকারন্য থাকবে মাজার প্রাঙ্গণ। আগত ভক্তদের বিশ্বাস এখানে এসে দোয়া করলে যে কোনো সমস্যার সমাধান মেলে।
সিলেট থেকে আসা ফুয়াদ আজাদ বলেন, প্রতি বছর এ মেলায় আসি। হযরত খানজাহানের মাজার জিয়ারত করি। ফকিরদের গান-বাদ্য শ্রবণ করি। আনন্দ ফূর্তি করে তিনদিন পরে চলে যাই।
পটুয়াখালীর ফয়সাল রহমান বলেন, আগে কখনও এ মেলায় আসিনি। খানজাহান আলীর (রহ) অনেক সুনাম শুনে এখানে এসেছি। মেলা উপভোগ করব। পাশাপাশি খানজাহানের দরবারে নিজের জন্য কিছু একটা চাইব।
ঢাকা থেকে আসা গার্মেন্টস কর্মকর্তা দীপা বলেন, বাগেরহাটে ঘুরতে এসেছি। এসে শুনলাম মেলা হবে তাই এখানে আসছি। খুব ভাল লাগছে মাজার ও মেলা দেখে।
মাজারের খাদেম মোস্তফা ফকির বলেন, মুরব্বিদের ধারণা মতে প্রায় সাড়ে ৬শ’ বছর ধরে মাজারে এ মেলা চলে আসছে। খানজাহানের অগণিত ভক্তরা দূর দূরান্ত থেকে এসে মাজার, দীঘিরপাড়সহ বিস্তীর্ণ স্থান জুড়ে যে যার মত করে তাদের আসর বসান। ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব ভক্তের পদচারণায় মাজার প্রাঙ্গণ যেন এক মিলন মেলায় পরিণত হয়ে ওঠে।
মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এ মেলা বসে। খানজাহানের হাজার হাজার ভক্ত তাদের নানা মনোবাসনা নিয়ে হাজির হন। তারা বিশ্বাস করেন খানজাহান এখানে কাউকে খালি হাতে ফিরান না। তাদের সব আশা পূরণ করেন খানজাহান। তাই সব সব ধর্মের মানুষ এই সময়ে হযরত খানজাহানের মাজারে মিলিত হন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে মেলায় পর্যাপ্ত ক্লোজ সার্কিট ( সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভক্তদের নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবে। এছাড়া সার্বিক তদারকির জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
আরএ