ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন করা নির্বাচন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮:৪২, মার্চ ২, ২০১৭
সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন করা নির্বাচন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা, ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টিজনরা।

বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) সকালে জতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এ মন্তব্য করেন।

বৈঠকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হলে কমিশনে বিসিএস ক্যাডারের মাধ্যমে অফিসার নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

কারণ নির্বাচনের সময়ে অন্য কোনো মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ দেওয়া অফিসারদের ওপর কমিশনের তেমন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে হারিয়ে যাওয়া আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত নির্বাচন কমিশনের কর্যক্রমে জনমনে কমিশনের প্রতি আস্থা কমে গেছে। তাই বর্তমান কমিশনের কর্মকর্তাদের আচার, আচরণ ও কথাবার্তা এমন হতে হবে, যেন সবাই মনে করে তারা কোনো নির্দিষ্ট দলের হয়ে কাজ করবেন না।

শামসুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, যে তারা নির্বাচনের সময় কেমন পরিবেশ চান। এছাড়া ইভিএম তৈরি করতে এমন লোকদের দায়িত্ব দিতে হবে, যেন তাদের ওপর সবার আস্থা থাকে। যাকে তাকে দিয়ে এটা করা ঠিক হবে না।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনই নতুন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ মনুষের মনে আশঙ্কা আমার ভোট আমি দিতে পারবো কিনা। এছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করাও বড় চ্যালেঞ্জ। সংবিধানের পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। তাই এমন ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ সংশোধন করা যায় কিনা এটাও কমিশনকে ভাবতে হবে।

গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা, ছবি: সুমন শেখতিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক নয়। তাই উপজেলা বা সিটি নির্বাচনেরর মাধ্যমে কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রমাণ হবে না। কারণ আমাদের মনে রাখতে হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে ক্ষমতার পালা বদলের বিষয়।

সুজনের নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার বলেন, স্টেক হোল্ডারদের মতামত নিয়ে ই-ভোটিংয়ের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে বর্তমান কমিশনকে। ছোট-ছোট নির্বাচন করে তারা প্রমাণ করবে, যে তারা সৎ, দক্ষ, যোগ্য এবং দেশপ্রেমিক। যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রতি মানুষের আস্থা থাকে।

বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। আগামী সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সব রাজনৈতিক দলেরর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের সামনে দু'টি বিকল্প আছে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে প্রশংসিত হওয়া। দ্বিতীয়টি হলো- অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে ইতিহাসে নিন্দনীয় হওয়া। একুশ শতকে বাঙালি জাতি নিন্দনীয় হওয়াও অপছন্দ করে না। নতুন কমিশন কেবল দায়িত্ব নিলো, কাজেই এখনই তাদের নিয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।

সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিলে আরও বক্তব্যে রাখেন- সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য বিচারপতি আব্দুল মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এমএ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।