ঢাকা, রবিবার, ৯ ভাদ্র ১৪৩২, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

মেলায় বইপ্রেমীদের হাতে হাতে বই

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৩৫, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
মেলায় বইপ্রেমীদের হাতে হাতে বই মেলায় বইপ্রেমীদের হাতে হাতে বই-ছবি-জি এম মুজিবুর

ঢাকা: অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষদিকে ভিড় যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে তালিকা নিয়ে বই কেনার ধুম। মেলায় যারা আসছেন তাদের প্রায় সবাই কোনো না কোনো বই কিনে ফিরছেন।

গ্রন্থমেলার ২৬তম দিন রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঘুরে দেখা গেছে, স্টলগুলোতে সব বয়সী ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের স্টলগুলোতে।

বেশিরভাগই বাসা থেকে পছন্দের লেখকের বইয়ের তালিয়ে নিয়ে এসেছেন। মেলায় ঘুরে ঘুরে তারা তালিকা ধরে বই কিনছেন।

মেলায় বইপ্রেমীদের হাতে হাতে বই-ছবি-জি এম মুজিবুরমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে কথা হয় স্কুলশিক্ষক সুমন বড়ুয়ার সঙ্গে। ছেলের জন্য কিছু সায়েন্স ফিকশন আর নিজের জন্য কয়েকটা গল্পের বই কিনেছেন তিনি। সুমন বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঘুরে ঘুরে বই কেনার সময় নেই। তাই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে তালিকা করে রেখেছিলাম। সে অনুযায়ীই বেশ কিছু বই কিনেছি।

গৃহিণী রহিমা আক্তার এক স্টল থেকে বিখ্যাত এক পুষ্টিবিজ্ঞানীর বই নিলেন। এর আগে আরও কিছু বই কিনেছেন তালিকা অনুযায়ী। তার মতে, তালিকা করে এলে বই কিনতে সুবিধা হয়।

মেলার শেষের দিকে যারা আসছেন অধিকাংশই নিজের জন্য, আবার উপহার দিতেও বই কিনছেন। আর তাদের এই বইপ্রেমে খুশি প্রকাশকরাও। তবে পাঠকেরা ঘুরে-ফিরে আলোচিত লেখকদের বইগুলোই নিচ্ছেন বেশি। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, এম আর আখতার মুকুল, সরদার ফজলুল করিম, সৈয়দ শামসুল হক, যতীন সরকার, হুমায়ূন আহমেদ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তসলিমা নাসরিন।

কথা প্রকাশের বিক্রয় প্রতিনিধি জাফরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সচেতন পাঠকদের সমাগম এখন বেশি। তারা আগে থেকে তালিকা করে এনে বই চাইছেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

চারুলিপি প্রকাশনীর প্রকাশক হুমায়ুন কবীর বলেন, বিক্রি ভালো। এখনকার পাঠকরা অনেক সচেতন। তারা জেনে-বুঝেই বই কিনছেন। যারা আসছেন, তারা প্রায় সবাই বই নিয়ে ফিরছেন।

বাংলা একাডেমির পরিচালক (জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ) অপরেশ কুমার ব্যানার্জী বাংলানিউজকে জানান, মেলার ২৬তম দিনে নতুন বই এসেছে ১০৩টি। আর মোড়ক উন্মোচন হয়েছে ৪৬টি বইয়ের।

মেলায় বইপ্রেমীদের হাতে হাতে বই-ছবি-জি এম মুজিবুরবিকেল ৪টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আত্মজীবনীমূলক সাহিত্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী। আলোচনায় অংশ নেন ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী, ড. এ. এস. এম. বোরহান উদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, আত্মজীবনী সাহিত্যরীতি হিসেবে বেশ পুরনো এবং প্রাচীনকাল থেকে এখন পর্যন্ত এর প্রচলন অব্যাহত রয়েছে। বাংলা ভাষায় অনেক মনীষী তাদের জীবনকাহিনী লিখে গেছেন। তত্ত্ব-বিস্ফোরণের যুগে শিল্পসাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো আত্মজীবনী-তত্ত্বও এক বহুল আলোচিত ক্ষেত্র হিসেবে গৃহীত হয়েছে। আত্মজীবনী রচয়িতাদের রচনাবলী প্রাসঙ্গিক সাহিত্য-সমালোচনা তত্ত্বের আলোকে পঠিত হলে বাংলা আত্মজীবনীমূলক রচনা এক বৈশ্বিক উচ্চতায় পৌঁছাবে।

সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে সংগীত পরিবেশন করেন ফেরদৌস আরা, ইয়াকুব আলী খান, লীনা তাপসী খান, শারমিন সাথী ইসলাম, প্রদীপ কুমার নন্দী, সুমন মজুমদার, মাহবুবা রহমান ও ফারহানা শিরিন।

২৭তম দিনে মেলায় যা থাকছে

এদিন বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা: গ্রন্থ পরিকল্পনা ও সম্পাদনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারিক সুজাত। আলোচনায় অংশ নেবেন মফিদুল হক, বদিউদ্দিন নাজির এবং খান মাহবুব। সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
ইইউডি/আরআর/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।