ঢাকা, বুধবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২২ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

যে কারণে স্ত্রীকে খুন করেন নজরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৯, অক্টোবর ১৫, ২০২৫
যে কারণে স্ত্রীকে খুন করেন নজরুল গ্রেপ্তার নজরুল

ঢাকা: প্রায় দুই দশকের সংসার ভেঙে গেল ভয়াবহ পরিণতিতে। স্ত্রীকে পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের সন্দেহ ও সম্পত্তি হারানোর আতঙ্কে খুন করেন স্বামী মো. নজরুল ইসলাম (৫৯)।

এরপর স্ত্রীর লাশ ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রেখে সন্তানদের ফুফুর বাসায় রেখে পালিয়ে যান তিনি।

অবশেষে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে কলাবাগান থানা পুলিশ। এ সময় তার বাসার ওয়ারড্রোব থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো দা।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।

ডিসি মাসুদ আলম জানান, নজরুল ইসলাম ও তাসলিমা আক্তার (৪২) দম্পতির সংসারজীবন ছিল প্রায় ২০ বছরের। তাদের তিন সন্তান। তবে দীর্ঘদিন ধরেই নজরুল তার স্ত্রীর ওপর অবিশ্বাস পোষণ করতেন। সন্দেহ করতেন, স্ত্রী পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং যে কোনো সময় তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিতে পারেন।

গত ১২ অক্টোবর রাতে কলাবাগান এলাকার নিজ ফ্ল্যাটে ফিরে তিনি দেখেন দরজার দুটি লক খোলা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী তাসলিমাকে ধারালো দা দিয়ে কোপাতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান তাসলিমা। পরে তিনি লাশ গামছা ও চাদরে মুড়িয়ে বাসার ডিপ ফ্রিজে রাখেন। এরপর রক্তের দাগ মুছে ফেলেন, জামাকাপড় ধুয়ে আলামত গোপনের চেষ্টা করেন।

পরদিন সকালে মেয়েকে বলেন, তোমার মা অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। এরপর সন্তানদের ফুফুর বাসায় রেখে নিজে প্রাইভেটকারে পালিয়ে যান।

নিহতের ছোট ভাই নাঈম হোসেন ১৩ অক্টোবর কলাবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকে ডিপ ফ্রিজ খুলে চাদরে মোড়ানো তাসলিমার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নজরুল ইসলামকে বংশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত দা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল জানান, স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ ও সম্পত্তি হারানোর ভয়ে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। পুলিশ জানায়, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট ও আরও ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয় ছিল—দুটিরই নমিনি ছিলেন স্ত্রী তাসলিমা।

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, চরম সন্দেহ, নিয়ন্ত্রণের মানসিকতা ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতাই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।

এমএমআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।