ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২১ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

ভেজালের বিরুদ্ধে বিএসটিআইকে আরও কঠোর হতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৩২, অক্টোবর ১৪, ২০২৫
ভেজালের বিরুদ্ধে বিএসটিআইকে আরও কঠোর হতে হবে সভায় বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম।

ঢাকা: বিশ্ব মান দিবসে উপলক্ষে বক্তারা বলেন, বিএসটিআইয়ের অনেক ল্যাবরেটরি আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।

এছাড়া বিএসটিআইয়ের সনদ যাতে অন্যান্য দেশ গ্রহণ করে সে বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সরকারের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করা প্রয়োজন। ভেজাল ও নকলকারীদের বিরুদ্ধে বিএসটিআইকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এ বিশ্ব মান দিবস- ২০২৫ উপলক্ষে ‘সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে-মান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।  

বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান, বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ এর চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর প্রধান মো. জাফর ইকবাল।  

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী।  

সভায় শিল্প সচিব বলেন, বিএসটিআই এখন যে অবস্থানে আছে যেটা অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ব মানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে মনে করি। বিএসটিআইতে স্থাপতি ন্যাশনাল হালাল ল্যাবরেটরিসহ অনেক ল্যাবরেটরি রয়েছে যেগুলো আন্তর্জাতিক মানের। বিএসটিআই থেকে লাইসেন্স গ্রহণের পর সে মান বজায় রেখে পণ্য বাজারজাত করার জন্য তিনি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান।

ক্যাবের সভাপতি সাবেক সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বিএসটিআই শিল্পের মানোন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। শিল্পের উন্নয়ন ও মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার জন্য তারা অনেক কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু পাবলিক পারসেপশন সে পরিমাণে নেই।

তিনি বলেন, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী হালাল সনদ প্রদান করা বিএসটিআইয়ের কাজ। এখানে আন্তর্জাতিক মানের হালাল ল্যাবরেটরি রয়েছে। হালাল সনদকে প্রমোট করতে পারলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের হালাল পণ্যের রপ্তানি বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এছাড়া তিনি পণ্য ভেজাল ও নকলকারীদের বিরুদ্ধে বিএসটিআইকে আরও কঠোর হওয়ার অনুরোধ জানান।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, বিগত কয়েক বছরে বিএসটিআইয়ের ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। বিএসটিআই বাংলাদেশে কোয়ালিটি প্র্যাকটিসের প্রতিচ্ছবি। এখানে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। আমরা ব্যবসায়ীরা এসব ল্যাবরেটরির সুবিধা কাজে লাগাতে চাই। এছাড়া তিনি হালাল ল্যাবরেটরি অ্যাক্রেডিটেশন, নতুন নতুন ক্ষেত্রে মান প্রণয়ন, মানের সরলীকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জ্যপূর্ণ মান প্রণয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিএসটিআইকে বিশেষ নজর দেওয়ার অনুরোধ জানান।

বিগত এক বছরে বিএসটিআইয়ের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, বিএসটিআইয়ের মানচিহ্ন নকল ও অবৈধ ব্যবহার প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স প্রদান, জাতীয় হালাল ল্যাবরেটরি স্থাপন, হেলমেট টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন, সোলার প্যানেল টেস্টিং ল্যাবরেটরি, সিমেন্ট টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনসহ স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদান, মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় চালু, পণ্য পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানের নতুন নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন এবং বিদ্যমান ল্যাবরেটরিসমূহে নতুন নতুন পণ্য পরীক্ষণ প্যারামিটার সংযুক্তিকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলায় আইএসও সনদ প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউশন অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম), কাউবেল কেফির লিমিটেড, অ্যাডভান্সড কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ মোট ১২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এসএমএকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।