ঢাকা, রবিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

সাংবাদিকের বেতন ন্যূনতম ৩৫ হাজার করার প্রস্তাব

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি বাস্তবায়নের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৪৭, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫
‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি বাস্তবায়নের দাবি শনিবার ডিআরইউ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক হয়। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকর করা এবং সাংবাদিকদের জন্য ন্যূনতম বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন সব ধরনের গণমাধ্যমের জন্য অবিলম্বে ওয়েজ বোর্ড কার্যকর করার ওপরও জোর দেন বক্তারা।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব দাবি উঠে আসে। ডিআরইউ এবং জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে অনেক ইতিবাচক সুপারিশ রয়েছে। তবে যেগুলোতে অসংগতি আছে, সেগুলোর সমালোচনা করা জরুরি।  

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শাস্তি বাতিল করার সুপারিশের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, সমাজে সহিংসতা রোধে এই বিধান থাকা আবশ্যক।

শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতির সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। এটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত।  

তিনি সম্পাদক ও প্রকাশকদের ইউনিয়ন থেকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এটি নীতিগতভাবে ঠিক নয়। অপসাংবাদিকতা রোধে সাংবাদিকদের জন্য সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা চালু করারও প্রস্তাব দেন তিনি।

প্রেস সচিব মনে করেন, সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩৫ হাজার টাকা হওয়া উচিত। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার শিকার হলে মালিক পক্ষকে তার দায়ভার নেওয়ার কথাওতিনি বলেন। প্রয়োজনে মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিধান রাখার কথাও উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।  

তিনি আরও প্রস্তাব দেন, মিডিয়া লাইসেন্স পেতে হলে অনলাইন গণমাধ্যমকে ১০-১৫ কোটি, পত্রিকার জন্য ২০ কোটি এবং টিভির জন্য ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত সিকিউরিটি মানি সরকারের কাছে জমা রাখতে হবে। এতে সংকটের সময় সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত করা যাবে।

ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, নিজেদের অধিকার নিজেদেরই আদায় করে নিতে হবে। সাংবাদিকরা এখনো ‘মবের’ শিকার হচ্ছেন এবং মিডিয়া কাঠামোতে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ বলেন, ইউনিয়ন ছাড়াও ডিআরইউ, প্রেস ক্লাব ও অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।  

তিনি প্রবীণ সাংবাদিকদের ভাতার আওতায় আনারও প্রস্তাব দেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, গণমাধ্যম কমিশনের রিপোর্টে স্বচ্ছতা ও সত্যতার ঘাটতি রয়েছে। তাই এই রিপোর্ট রিভিউ করা প্রয়োজন।

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা এবং রফিকুল ইসলাম আজাদ যথাক্রমে ইউনিটির প্রতিনিধিকে কমিশনে যুক্ত করা এবং সাংবাদিকদের জন্য একটি আলাদা হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানান।

অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ডিবিসি নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ভূঁইয়া (লোটন একরাম) টিভি ও অনলাইনকে ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনার কথা বলেন।  

ঢাকা মেইল ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল সাংবাদিকদের জন্য সপ্তাহে দুই দিন ছুটির গুরুত্ব তুলে ধরেন।  

ডিআরইউর সহ-সভাপতি গাযী আনোয়ার সাংবাদিকদের হত্যা ও নির্যাতনের বিচারের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের দাবি জানান।

আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন মাইনুল হাসান সোহেল, মোতাহার হোসেন মাসুম, মসিউর রহমান খান, মাহমুদুর হাসান, দিদারুল আলম ও হাফিজুল ইসলাম।

ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।