ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি: টেলিগ্রাম প্রতারণা চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩২, আগস্ট ১৪, ২০২৫
ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি: টেলিগ্রাম প্রতারণা চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার প্রতারণা চক্রের সদস্য নয়ন আলী

টেলিগ্রামের মাধ্যমে ভুয়া চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি পরিচালনাকারী একটি চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্র প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপের অজ্ঞাত নম্বর থেকে লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞাপন পাঠায়। অল্প সময়ে, অল্প পরিশ্রমে ঘরে বসে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেওয়া হয়। আগ্রহ দেখালেই ভুক্তভোগীকে টেলিগ্রাম অ্যাপের একটি গ্রুপ বা লিংকে যুক্ত করা হয়। সেখানে ‘টাস্ক’ বা কাজের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

প্রথম কয়েকটি টাস্ক শেষ করলেই বিকাশ, নগদ কিংবা রকেটের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্টে বেতন পাঠানো হয়। এভাবে ধীরে ধীরে ভুক্তভোগীর আস্থা অর্জনের পর শুরু হয় মূল প্রতারণা— উচ্চ মুনাফার আশায় ‘বড় টাস্ক’ কিনতে বিনিয়োগ করানো হয়। টাকা নেওয়ার জন্য চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। একবার বিনিয়োগ করলে নানা অজুহাতে আরও অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে এসব অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি করে বিদেশে পাচার করা হয়।

সম্প্রতি এই চক্রের সদস্য নয়ন আলীকে (৩৪) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় প্রতারণায় ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন আলী চক্রটির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। সে জানায়, দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সম্প্রতি একজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অন্যান্য ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে সর্বমোট প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলেও স্বীকার করেছে।

নয়ন আলী আরও জানায়, তার পরিচিত জুহুরুল ইসলাম নামে এক চাচার মাধ্যমে এই চক্রে যুক্ত হয় সে। চক্রটির মূল হোতা মেহেদী হাসান। মেহেদী ও জুহুরুলের নির্দেশে নয়ন তার নিজের এবং বোন মাসরুফার ডাচ-বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। প্রতি ১ লাখ টাকার লেনদেনে সে ১ হাজার টাকা কমিশন পেত। এভাবে গত তিন মাসে কমিশন হিসেবে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় করেছে।

সিআইডি জানায়, গত তিন মাসে নয়নের ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪ কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এসব অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে হুন্ডি হয়ে বিদেশে পাচার করা হতো।

নয়ন আলীর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়াও তার নামে একই ধরনের অভিযোগে চট্টগ্রামেও আরেকটি মামলা রয়েছে।

এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।