জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় নিহত ছয়জনের লাশ দীর্ঘ এক বছর ধরে মর্গে সংরক্ষিত থাকার পর অবশেষে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশগুলো আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
লাশ হস্তান্তরের সময় মর্গে উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন, রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মুনসুর ও ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী গোলাম মোখলেছুর রহমান। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দাফন সেবা কর্মকর্তা মো. কামরুল আহমেদ লাশগুলো বুঝে নেন।
ডা. মোখলেছুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের ৭ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যে লাশগুলো মর্গে আনা হয় এবং প্রত্যেকটির ময়নাতদন্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, লাশগুলোর পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার ভাষ্য অনুযায়ী, একটি লাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে এবং বাকি পাঁচটিতে ধারালো ও ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত ছিল।
ফারুক হোসেন বলেন, ডিএনএ ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়েও পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। আদালতের অনুমতি নিয়ে লাশগুলো বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, লাশগুলোর বিভিন্ন আলামত সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ দাবি করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানার সামনে থেকে ২০, ২২ ও ২৫ বছর বয়সী তিন যুবকের লাশ ঢামেক মেডিকেলে পাঠানো হয়। একইদিনে আরও দুটি লাশ—একজন আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী যুবক ও ৩২ বছর বয়সী নারী—আনা হয়, তবে তাদের মৃত্যুর স্থান জানা যায়নি। এর আগে ৭ আগস্ট গুলিস্তান এলাকা থেকে ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। সবগুলো লাশের সুরতহাল তৈরি করে শাহবাগ থানা এবং ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগ।
পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় লাশগুলো দীর্ঘ এক বছর হিমঘরে সংরক্ষণে রাখা হয়েছিল। অবশেষে সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশগুলো দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হলো।
এজেডএস/আরবি