ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু আজ থেকে। দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুন্দরভাবে করা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে কেবিনেট বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আজকে অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে প্রথমে আমি বলব প্রধান উপদেষ্টা তার সূচনা বক্তব্যে বলেছেন, গত ৫ আগস্ট আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু। এ লক্ষ্যে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য বলা হয়েছে। সেটা ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজন জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আজ থেকে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রথম এবং প্রধান কাজ হচ্ছে নির্বাচন সুন্দরভাবে করা। এটাই প্রধান কাজ। আমাদের পুরো ফোকাস নির্বাচনকে ঘিরে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।
এছাড়া আরও দুইটা কাজ আছে আমাদের একটা হলো সংস্কার। এ বিষয়ে শিগগিরই দেখবেন ড. আলী রীয়াজ সম্ভবত একটা প্রেস কনফারেন্স করবেন। সেখানে তিনি আরও হাইলাইট করবেন। আর হচ্ছে ট্রায়াল। সে বিষয়ে প্রসিকিউটর চিফ তাজুল ইসলাম এখন থেকে নিয়মিত আপনাদেরকে জানাবেন। চারটা ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ২৭টি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। ১৬টির চার্জশিট হয়েছে এবং এ পুরো বিষয়টা কেবিটেন প্রতিনিয়ত আপডেট নিচ্ছেন।
আজকের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনের তারিখের বিষয়টা নির্বাচন কমিশন দেখেন। তবে যে টাইম লাইন অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে এখন সেটা নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট ডেট জানাবে। এটা ওনাদের দায়িত্ব তারাই আপনাদের জানাবেন।
নির্বাচনের বিতর্ক এড়াতে এসপি-ওসিদের লটারির মাধ্যমে নিয়োগ হবে। সেক্ষেত্রে ডিসি নিয়োগের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। অতি শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর আর এ বিষয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। তবে সবার মূল ফোকাস হচ্ছে কীভাবে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন করা যায়। এটাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
সেটা করার জন্য প্রশাসন কী ভূমিকা নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা করার জন্য আমাদের প্রচুর মিটিং হচ্ছে। গত এক মাসে প্রধান উপদেষ্টা দুটি মিটিং করেছেন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বাহিনীদের নিয়ে। অনেক কথাবার্তা হয়েছে। এরই মধ্যে একটা হচ্ছে কত বেশি আমরা আনসার, পুলিশ এবং সেনবাহিনী কত বেশি নিয়োজিত করতে পারি। সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে তো ছিল ৮ লাখের মতো দেওয়া যাবে। তবে এখন আরও বেশি ৫০ হাজার দেওয়া যায় কীনা সে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আগে এটা ধারণা দেওয়া হয়েছিল ৬০ হাজার টুপস থাকবে। এখন চিন্তা করা হচ্ছে কত বেশি সংখ্যক নিয়োজিত করা যায়৷ এটা প্রতিনিয়ত রিভিউ হচ্ছে। আমিতো বলবো অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হচ্ছে নির্বাচন।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা বা এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত তাদের লিডারশিপ পদের ট্রায়ালটা শেষ হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ আস্থা তৈরি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন সেটা মোটামুটি সব রাজনৈতিক দলগুলো স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে তো এরআগে অনেক দফা আলোচনা হয়েছে সামনে আরও আলোচনা হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান রয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে আমাদের খুব ভালো একটি নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন আমাদের চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশের ইতিহাসে যেন সবচেয়ে ভালো একটা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি।
সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে, মিটিং হচ্ছে। আপনারা অনেক কিছু দেখবেন, নির্বাচন কমিশনও প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা আশা করছি সময় মতো সব কিছু দেখবেন।
আপনারা কি ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রস্তুতির প্রথম কাজ ছিল নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া। গতকাল কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি গেছে। আপনারা দেখছেন আমাদের পুরো ফোকাস নির্বাচনকে সামনে রেখে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচনটা হবে সেটা ফ্রি ফেয়ার হবে এবং উৎসবমুখর হবে আমরা সবাই আনন্দের সঙ্গে ভোট দেবো। এতে কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না।
জিসিজি/জেএইচ