ঢাকা: পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম ব্যস্ত কেন্দ্র বংশাল রোড। পাশাপাশি এখানে আছে আবাসিক এলাকাও।
এই জলাবদ্ধতার জন্য অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার কাজের সমন্বয়হীনতাসহ অব্যবস্থাপনাকে দুষছেন নাগরিকরা। তারা এই ভোগান্তি থেকে বাঁচতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
রোববার (২৭ জুলাই) দিনে ও রাতে অবিরাম বর্ষণের পর সোমবার (২৮ জুলাই) বংশাল রোডে গিয়ে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এলাকাবাসীর ভাষ্যে, বংশাল রোড আশপাশের তুলনায় কিছুটা নিচু এলাকা। ফলে আশপাশ থেকে পানি এসে এখানে জমে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে পানি দ্রুত নিষ্কাশন করা সম্ভব হয় না।
অনেক বাসিন্দা বলেন, আশপাশে যেসব খাল ছিল, তা এখন নেই বললেই চলে। কিছু খাল ময়লায় ভরাট হয়ে গেছে, ফলে পানি বের হওয়ার পথ নেই। প্লাস্টিক ও বর্জ্য ড্রেনে ফেলার কারণেও এত স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে অল্প বৃষ্টিতেই ড্রেন ওভারফ্লো করে। ১৫–২০ মিনিটের মাঝারি বৃষ্টিতেই হাঁটুর ওপরে পানি জমে যায় বংশাল রোডে। পানি ঢুকে পড়ে দোকানপাট ও নিচতলা বাসাবাড়িতে।
ব্যবসায়ীসহ এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, পানি জমলে রিকশা ও পায়ে হেঁটে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের।
বংশাল রোডের মামা মোটরসের মালিক মো. সাজেদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি বহু বছর ধরে এই রোডে মোটরসাইকেলের পার্টসের ব্যবসা করে আসছি। এই রোডে ছয়-সাতশ’ মোটরসাইকেলের পার্টসের দোকান আছে। সারা দেশ থেকে এখানে মোটরসাইকেলের পার্টস কিনতে আসেন ক্রেতারা, খুচরা ও পাইকারি সব ধরনের বেচাকেনা হয়। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু পানি জমে যায়, দোকান খোলা সম্ভব হয় না। এমনকি ক্রেতাদেরও আসতে নানান অসুবিধা পড়তে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, যখন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় তখন এই ময়লা পানির ভেতর দিয়ে নামাজ পড়তেও মসজিদে যাওয়া যায় না।
সাজেদুর বলেন, দ্রুত এই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা যদি না করা হয়, তাহলে এই বংশালের বাসিন্দা ও বড় ব্যবসায়ীদের মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
বংশাল রোডে মোটরসাইকেলের মালামাল কিনতে আসা মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিরপুরে। আমি বিগত ১০-১২ বছর যাবত ব্যবসা করি এবং বংশাল থেকে মোটরসাইকেলের পার্টস নিই। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার কারণে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পায়ে হেঁটে চলাচল করা সম্ভব হয় না। রিকশাতে দ্বিগুণ ভাড়া দেওয়া লাগে, তারপর যে কোনো সময় রিকশা উল্টে পড়ে মালামাল নষ্ট হয় এবং নিজেদের ঝুঁকিতে থাকতে হয়।
দ্রুত পানি নিষ্কাশনের একটি স্থায়ী ব্যবস্থা না করলে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে বলে মনে করেন আজিজুর।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, প্রতি বর্ষায় একই দৃশ্য দেখা যায় বংশাল রোডে। কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই। রাস্তা ঠিক করলেও ড্রেন ঠিক করে না। নতুন রাস্তা উঁচু করে, কিন্তু ড্রেন বা গলি নিচু থেকে যায়। , ফলে জলাবদ্ধতা আরও বাড়ে।
জিএমএম/এইচএ/