রাজধানীর আদাবরে খুন হওয়া মো. ইব্রাহিম শিকদারকে (৩৮) গুলি করে হত্যার আগে সালিশে চড় মারেন খুনি সজীব। সেখানে তাকে লক্ষ্য করে গুলিও করেন তিনি।
গত বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আদাবরের নবোদয় হাউজিং সোসাইটির বায়তুল মামুর জামে মসিজদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম পেশায় একজন গাড়িচালক ছিলেন। তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ নবোদয় হাউজিংয়ের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সজীব ও সঙ্গে থাকা তার ভাই রুবেলকে ঘটনাস্থলেই আটক করে মারধর করেন স্থানীয়রা। পরে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
সজীব ও রুবেলের নামে নিহত ইব্রাহিমের বড় ভাই কবির হোসেন শিকদার আদাবর থানায় অস্ত্র ও হত্যা আইনে দুটি মামলা করেন। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত ইব্রাহিমের ভাগ্নে সুজন শিকদার আদাবরের ডিম ব্যবসায়ী সজীবের দোকানে কাজ করতেন। কয়েকদিন আগে সুজন ভ্যানে করে ডিম নিয়ে আসার সময় কয়েকটি ডিম ভেঙে যায়। এজন্য সুজনকে মারধর করেন সজীব। এ বিষয় নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় নবোদয় হাউজিংয়ে বায়তুল মামুর মসজিদের কাছে একটি দোকানে সালিশে বসেন ইব্রাহিম ও সজীব। সালিশে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সজীব উত্তেজিত হয়ে ইব্রাহিমের গালে চড় মারেন।
এতে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে সজীব পিস্তল বের করে গুলি করেন। তবে গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তখন সজীব ও তার ভাই রুবেল সালিশ থেকে বেরিয়ে বেরিয়ে যান। তাদের পেছন পেছন রাস্তায় এসে ইব্রাহিম সালিশ শেষ করতে বললে সজীব খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করেন। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
গুলি করার সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সালিশের মধ্যেও ইব্রাহিমকে লক্ষ্য করে গুলি করেন সজীব। তবে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তখন অক্ষত থাকেন ইব্রাহিম। পরে রাস্তায় আবার সজীব গুলি করলে ইব্রাহিম মারা যান। আমরা সজীবের কোমর থেকে গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল পেয়েছি।
ওসি আরও জানান, সজীব ও রুবেল অসুস্থ হওয়ায় তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা সুস্থ হলে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এসসি/এমজেএফ