ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৫ মে ২০২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় কোরবানির পশু চাহিদার চেয়ে পৌনে ৪ লাখ বেশি

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:২৪, মে ১৫, ২০২৫
খুলনায় কোরবানির পশু চাহিদার চেয়ে পৌনে ৪ লাখ বেশি

পবিত্র ঈদুল আজহায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় এ বছর চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮৯টি কোরবানির পশু বেশি আছে। বিভাগের ঝিনাইদহে সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

এ বছর খুলনা বিভাগের দশ জেলায় কোরবানি উপযোগী পশুর সংখ্যা ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৮টি। আর চাহিদা হচ্ছে ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৯টি। সে হিসাব অনুযায়ী এবারে জেলায় কোরবানির পশুর সংখ্যা চাহিদার চেয়ে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮৯টি বেশি।

এ কারণে কোরবানির পশুর সংকট হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই বলে জানিয়েছে খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বাংলানিউজকে জানান, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ২০২৫ সালে প্রায় ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৯টি পশু কোরবানির সম্ভাবনা আছে। খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এই বিভাগে ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৮টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৪৮টি, বলদ ৪৫ হাজার ৯১৮টি, গাভী ৭৩ হাজার ৬৬৫টি, মহিষ ৬ হাজার ৩১৭টি, ছাগল ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৩টি, ভেড়া ৫১ হাজার ১৩২টি এবং অন্যান্য পশু ৯৫টি।

তিনি আরও জানান, কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে খুলনায় প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩১টি, বাগেরহাটে প্রায় ৮৫ হাজার ৪৮টি, সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লাখ ৬০১টি, যশোরে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭৪টি, ঝিনাইদহে জেলায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ১২৯টি, মাগুরায় ৮১ হাজার ৪৭৩টি, নড়াইলে ৫৪ হাজার ৫৮৫টি, কুষ্টিয়ায় ২ লাখ ৯৪৮টি, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৬টি, মেহেরপুরে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৩টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২৪ সালে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় প্রায় ১০ লাখ ৫ হাজার ৭৭০টি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এই বিভাগে ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে ষাঁড় ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৬৫টি, বলদ ৫৮ হাজার ২৮৯টি, গাভী ৬৮ হাজার ৭৯০টি, মহিষ ৫ হাজার ৬৫৪টি, ছাগল ৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৯৫টি, ভেড়া ৪৯ হাজার ৫২৫টি ও পশু অন্যান্য ৮৪৭টি।

মোট কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে খুলনায় প্রায় ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৮টি, বাগেরহাটে প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ৪১৩টি, সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার ৬৫৯টি, যশোরে প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার ৬১৭টি, ঝিনাইদহ জেলায় ২ লাখ ১৮ হাজার ৪৩১টি, মাগুরায় ৭৮ হাজার ৫৯১টি, নড়াইলে ৫২ হাজার ৫৪৭টি, কুষ্টিয়ায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৯টি, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪০২টি, মেহেরপুরে ১ লাখ ৯০ হাজার ৮৩৮টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।

২০২৩ সালে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১১ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৮টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে খুলনায় ছিল প্রায় ৯২ হাজার ৪০০টি, বাগেরহাটে প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ৩০০টি, সাতক্ষীরায় প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার, যশোরে প্রায় ৮০ হাজার ১০০টি, ঝিনাইদহ জেলায় ২ লাখ ৫ হাজার, মাগুরায় ২৬ হাজার ৮৫০টি, নড়াইলে ৫৪ হাজার ৯০০টি, কুষ্টিয়ায় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৭৫০টি, চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০টি, মেহেরপুরে ১ লাখ ৯০ হাজার ৫০০টি গবাদি পশু ছিল।

প্রস্তুতকৃত পশুর মধ্যে ষাঁড় ছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫৭টি, বলদ ৪৪ হাজার ২৮৮টি, গাভী ৬৩ হাজার ১৯২টি, মহিষ ৫ হাজার ৫৬টি, ছাগল ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৮২৩টি, ভেড়া ২৮ হাজার ৯৫৭টি। উদ্বৃত্ত ছিল ৩ লাখ ৫৪ হাজার পশু।



পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে খুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও খামারিরা। বিভিন্ন খামারে প্রস্তুত করা হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু। ঈদকে সামনে রেখে গরু পরিচর্যার ব্যস্ততা সংশ্লিষ্টরা।

বটিয়াঘাটার মেসার্স পূরবী অ্যাগ্রো ফার্মের পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ফার্মে ২৪টি কোরবানিযোগ্য গরু আছে। ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকার গরু আছে এ ফার্মে। আশা করছি এবার ভালো দাম পাব।

দাকোপের বদ্যমারী গ্রামের গরু পালনকারী সুপ্রভাত বলেন, আমার ৪টা গরুর মধ্যে এ বছর কোরবানিতে একটা বিক্রি করা যাবে।

ডুমুরিয়ার গুটুদিয়ার বিসমিল্লাহ অ্যাগ্রো ফার্মের পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলানিউজ বলেন, গো-খাদ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পশু পালনে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেক খামারি।

তবে খুলনার সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গায় চোরাপথে ভারতীয় গরুর আমদানি ঠেকানো না গেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ওই এলাকার খামারিরা। তারা সীমান্ত দিয়ে গরু আমদানি বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার দাবি জানান।

এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।