ঢাকা, সোমবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ জুলাই ২০২৫, ২৫ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ভারতে ‘৩,৫০০ কোটি রুপির মদ কেলেঙ্কারি’ মামলায় অন্ধ্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর নাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৪০, জুলাই ২১, ২০২৫
ভারতে ‘৩,৫০০ কোটি রুপির মদ কেলেঙ্কারি’ মামলায় অন্ধ্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর নাম ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি

ভারতের আন্ধ্র প্রদেশ সরকার ২০১৯ সালে একটি নতুন মদ নীতি চালু করে, যার মাধ্যমে সরকার মদের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এই নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি রুপির ঘুষ-কমিশন বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই কথিত মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সিআইডি তদন্তে, ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির (ওয়াইএসআরসিপি) প্রধান ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডিও ঘুষের অর্থ পেয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। যদিও মামলার চার্জশিটে এখনো তাকে অভিযুক্ত হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।  

শনিবার (১৯ জুলাই) সিআইডি এই চার্জশিট বিজয়ওয়াড়ার একটি আদালতে জমা দিয়েছে, তবে আদালত এখনো এটি গ্রহণ করেনি।

তবে রবিবার (২০ জুলাই)  ওয়াইএসআরসিপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) কেন্দ্রীয় সরকারকে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা”র অভিযোগে অভিযুক্ত করে। দলটির দাবি, এই মামলা চাপ সৃষ্টি ও হুমকির মাধ্যমে নেয়া বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে গড়া হয়েছে। ওয়াইএসআরসিপি নেতা জগন মোহন রেড্ডি, দলের তিনবার নির্বাচিত এমপি পি ভি মিধুন রেড্ডির গ্রেপ্তারের ঘটনায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন।

সিআইডির তদন্তে জানা যায়, মদ কেলেঙ্কারিতে ওয়াইএসআরসিপি'র শীর্ষ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। মূল অভিযুক্ত কেসিরেড্ডি রাজশেখর রেড্ডি, যিনি জগন মোহন রেড্ডির তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা ছিলেন, তিনি ঘুষের টাকা পাচার করতে ভুয়া কোম্পানি তৈরি করেন। ধারণা করা হচ্ছে, গত নির্বাচনে তিনি প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি রুপি বিভিন্ন ওয়াইএসআরসিপি নেতার মধ্যে বিতরণ করেন। এর মধ্যে রয়েছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য ভি বিজয়সাই রেড্ডি ও রাজমপেটের লোকসভা সদস্য পি ভি মিধুন রেড্ডি, যাদের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত অর্থ জগন মোহন রেড্ডির কাছে পৌঁছায়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, এই নেতারা মদ নীতিতে পরিবর্তন এনে, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ম্যানুয়াল প্রক্রিয়া চালু করেন এবং রাজ্য বেভারেজ কর্পোরেশনে অনুগতদের নিয়োগ দেন। এভাবে তারা মদের সরবরাহ ও বিক্রির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পছন্দের মদ কোম্পানিগুলো থেকে মোটা কমিশন আদায় করতেন। এই পাচার করা অর্থের একটি অংশ নির্বাচনে ব্যবহার করা হয় এবং বাকি অর্থ জমি, সোনা ও বিদেশে (বিশেষ করে দুবাই ও আফ্রিকায়) বিলাসবহুল সম্পদ ক্রয়ে বিনিয়োগ করা হয়।

ওয়াইএসআরসিপি'র সমন্বয়কারী সাজ্জালা রামকৃষ্ণ রেড্ডি চার্জশিটের নিন্দা করে বলেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, এই মামলা মনগড়া এবং চাপের মুখে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গঠিত, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী নেতাদের সম্মানহানি করা, অথচ চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের অধীনে ঘটে যাওয়া কেলেঙ্কারিগুলো ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে।

এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।