যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিন সেতুতে মেক্সিকোর নৌবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ জাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এ ঘটনায় দুজন নিহত এবং আরও ১৯ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ‘কুয়াউতেমোক’ নামের জাহাজটি শনিবার ২৭৭ জন আরোহী নিয়ে চলার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়ে। ক্যাপ্টেন জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুতে গিয়ে আঘাত হানে।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জাহাজের পাল তোলার উঁচু খুটিগুলো সেতুতে ধাক্কা খায়। এ সময় খুঁটিতে অবস্থান করা কয়েকজন নাবিক নিচে পড়ে যান। খুঁটি ভেঙে হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী ব্রুকলিনের বাসিন্দা নিক কোরসো। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই পুরো এলাকায় আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি এএফপিকে বলেন, চারদিকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়, কিছু নাবিক পাল তোলার খুঁটিতে অবস্থান করছিলেন।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে নিশ্চিত করেন, এ ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। আহত ১৯ জনের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ব্রুকলিন সেতুর বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছে, যান্ত্রিক ত্রুটি এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিউইয়র্ক কোস্ট গার্ড জানায়, ‘কুয়াউতেমোক’ জাহাজের পাল তোলার তিনটি খুঁটিই ভেঙে পড়েছে।
জাহাজটি যখন সেতুর সঙ্গে ধাক্কা খায়, তখন তীরের ধারে থাকা লোকজন আতঙ্কে ছুটে পালিয়ে যায়। কেলভিন ফ্লোরেস নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, আমি তখন কাজে ছিলাম। সেখান থেকেই পুরো ঘটনাটা চোখের সামনে ঘটতে দেখি।
দুর্ঘটনার পর ‘কুয়াউতেমোক’ জাহাজটিকে ঘটনাস্থল থেকে টেনে সরিয়ে নেওয়া হয়। মেক্সিকান নৌবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২৯৭ ফুট (৯১ মিটার) এবং প্রস্থ ৪০ ফুট (১২ মিটার)। প্রথমবার এটি সমুদ্রে ভাসে ১৯৮২ সালে।
প্রতি বছর নৌবাহিনীর সামরিক শিক্ষাক্রম শেষে ক্যাডেটদের চূড়ান্ত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে জাহাজটি সমুদ্রে যাত্রা করে। চলতি বছর এটি ৬ এপ্রিল মেক্সিকোর আকাপুলকো বন্দর থেকে রওনা দেয় জাহাজটি। এর চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল আইসল্যান্ড।
পুলিশ জানায়, ‘কুয়াউতেমোক’ জাহাজের পাল তোলার খুঁটির উচ্চতা ১৫৮ ফুট। আর নিউইয়র্ক পরিবহন বিভাগের ওয়েবসাইট বলেছে, ব্রুকলিন ব্রিজের নিচের সবচেয়ে উঁচু খোলা অংশের উচ্চতা মাত্র ১৩৫ ফুট।
আরএইচ