ইরান থেকে বিতাড়িত আফগান নাগরিকদের বহনকারী একটি যাত্রীবাহী বাস আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে ১৭ শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭১ জন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেলে ইসলাম কালা সীমান্ত পেরিয়ে কাবুলগামী ওই বাসটি একটি ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে। সংঘর্ষের পরপরই বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বহু যাত্রীর মৃত্যু হয়।
আফগান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র আহমাদুল্লাহ মুত্তাকি এবং স্থানীয় পুলিশের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
পুলিশ জানিয়েছে, অতিরিক্ত গতি ও চালকের অসাবধানতার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় বাসটিতে শতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে।
এর আগের দিনই ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনি ঘোষণা দেন, আগামী এক মাসে আরও আট লাখ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর বেশিরভাগই আফগান নাগরিক।
ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে ৯২১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এটি শুধু একটি ভূখণ্ডগত বিভাজন নয়-এটি ভাষা, ধর্ম, ইতিহাস ও ভাগ্যগত অভিন্নতার সেতুবন্ধও বটে। বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ ও দখলদারিত্ব থেকে পালিয়ে আসা অর্ধকোটিরও বেশি আফগান নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে ইরান-যা এই অঞ্চলজুড়ে সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী শরণার্থী বাস্তবতা।
১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর লাখ লাখ আফগান নাগরিক ইরানে আশ্রয় নেন। এরপর ১৯৯৬ সালে তালেবান শাসন, ২০০১ সালে মার্কিন হামলা ও সর্বশেষ ২০২১ সালে তালেবানের ফের ক্ষমতা গ্রহণ—প্রতিটি ধাপেই আফগান জনগণের একটি বড় অংশ ইরানের দিকে ছুটে এসেছে।
এসআইএস