মাঝ-আকাশের একট অদ্ভুত ও ভয়ংকর ঘটনার কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছে জার্মান সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, যেখানে জানানো হয় জার্মানি থেকে স্পেনগামী লুফথানজা কোম্পানির একটি ফ্লাইটে প্রায় ১০ মিনিট কোনো পাইলট ছিল না। ওই বিমানের সহ-পাইলট হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েছিলেন এবং ক্যাপ্টেন টয়লেটে ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তবে তদন্ত শেষে এখন তা সামনে এসেছে।
৪৩ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন জানান, লুফথানজার এয়ারবাস এ৩২১ এর একটি ফ্লাইট ১৯৯ জন যাত্রী নিয়ে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে স্পেনের সেভিলের উদ্দেশে যাচ্ছিল। ফ্লাইটের তখনো ৩০ মিনিট বাকি ছিল। সহ-পাইলট (বয়স ৩৮) তখন সচেতন ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন দেখে তিনি টয়লেটে যান। কিন্তু আট মিনিট পর ফিরে এসে তিনি দেখতে পান, ককপিটের দরজা খুলছে না—যদিও তিনি সিকিউরিটি কোড সঠিকভাবে ব্যবহার করেছিলেন।
ক্যাপ্টেন ভয় পেয়ে ককপিটে ইন্টারকমের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। তখন তিনি জরুরি কোড ব্যবহার করে দরজা খোলার চেষ্টা করেন। ঠিক তখনই ভেতর থেকে সহ-পাইলট হঠাৎ চেতনা ফিরে পেয়ে নিজেই দরজা খুলে দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় সহ-পাইলট ছিলেন ফ্যাকাশে, ঘামে ভেজা ও অস্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করছিলেন— দেখেই ক্যাপ্টেন তৎক্ষণাৎ কেবিন ক্রুদের সহায়তা চান।
বিমানের ক্রু এবং একজন যাত্রী হিসেবে থাকা চিকিৎসক, সহ-পাইলটকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা ছিল সহ-পাইলটের হৃদ্রোগ-সম্পর্কিত সমস্যা হতে পারে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহ-পাইলট জানান, তিনি কখন অচেতন হয়েছেন, সেটি তার মনে নেই। তিনি বলছিলেন, শেষবার মনে আছে তারা জারাগোজা শহরের ওপর দিয়ে উড়ছিলেন। তারপর যখন জ্ঞান ফেরে, তখন নিজেকে দেখেন কেবিন ক্রু এবং ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তার অচেতন হওয়া এত দ্রুত ঘটেছিল যে তিনি অন্য কাউকে জানানোরও সুযোগ পাননি।
ক্যাপ্টেন এরপর বিমানের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর মাদ্রিদে জরুরি অবতরণ করেন।
সহ-পাইলটকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা জানান, হঠাৎ এই গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার কারণ ছিল স্নায়বিক সমস্যা। পরে
উড্ডয়নের জন্য তার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যগত ছাড়পত্র সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমএম