কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখাচ্ছে লিবারেল পার্টি। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিটিভি এবং সিবিসি বলছে, প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে দলটি সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
কানাডার পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে প্রয়োজন ১৭২টি আসন। তবে ভোট গণনা এখনো চলমান থাকায় স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, লিবারেলরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে পারবে কিনা।
দেশটির এবারের নির্বাচনী প্রচারণা ছিল উত্তপ্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে ৫১তম রাজ্য হিসেবে যুক্ত করার হুমকি দেশজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এরকম প্রেক্ষাপটে কানাডার সার্বভৌমত্ব রক্ষার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন কার্নি। মার্চে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ঘরের কর্তা। কোনো শক্তিকে আমাদের দুর্বল করতে দেব না।
কার্নির রাজনৈতিক উত্থানও ছিল নাটকীয়। মাত্র কয়েক মাস আগে, জানুয়ারিতে, জনপ্রিয়তার ভাটা আর মন্ত্রিসভার বিদ্রোহের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দলের অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জিতে মার্চে প্রধানমন্ত্রী হন কার্নি, যিনি এর আগে একজন প্রভাবশালী ব্যাংকার ছিলেন।
নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে লিবারেল পার্টি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক লড়াইয়ে কানাডার দৃঢ় অবস্থান জনগণের মন জয় করেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
এদিকে, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে রয়েছেন অভিজ্ঞ পার্লামেন্ট সদস্য পিয়েরে পয়েলিয়েভ্রে। তবে শেষ মুহূর্তের জরিপগুলো দেখাচ্ছে, জনসমর্থনে লিবারেলরা পরিষ্কারভাবে এগিয়ে আছে।
কানাডার ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের রূপরেখা এখন নির্ভর করছে চূড়ান্ত ফলাফলের ওপর। সংখ্যাগরিষ্ঠ নাকি সংখ্যালঘু সরকার— সেটির জন্য আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে।
কার্নি এর আগে কখনোই কোনো রাজনৈতিক পদে আসীন ছিলেন না। সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার হিসেবে তার পরিচিতি ছিল। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দা এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিটের জটিল সময়ে কানাডার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার অভিজ্ঞতাগুলোকে কাজে লাগিয়েই তিনি কানাডিয়ান ভোটারদের কাছে আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেন। হোয়াইট হাউস থেকে ঘোষিত শুল্কের ঝড়ে যখন দেশটির অর্থনীতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে, তখন অনেক কানাডিয়ান নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বের খোঁজ করছিলেন— আর সেই মুহূর্তে নিজের সফল অর্থনৈতিক নেতৃত্বের গল্প তুলে ধরেন কার্নি।
এমএম