ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩ সফর ১৪৪৭

ফুটবল

রিংয়ে আফরা, মাঠে আফঈদা—দুই বোন, এক স্বপ্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১০, জুলাই ২৮, ২০২৫
রিংয়ে আফরা, মাঠে আফঈদা—দুই বোন, এক স্বপ্ন আফরা খন্দকার প্রাপ্তি

ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হওয়ার। কিন্তু বিকেএসপির ট্রায়ালে সুযোগ না পেয়ে মন খারাপ হয়েছিল আফরা খন্দকার প্রাপ্তির।

সেই মনখারাপই পরে বদলে যায় আত্মবিশ্বাসে। আর আজ তিনি দেশের একজন সফল নারী বক্সার। বয়স মাত্র ২১, কিন্তু রিংয়ে তার সাহসী উপস্থিতি এবং অর্জন অনেকটাই বড় করে তুলেছে তাকে।

সবচেয়ে আনন্দের কথা, ছোট বোন আফঈদা খন্দকার প্রান্তিও খেলছেন দেশের হয়ে, তবে ফুটবল মাঠে। জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য এই তরুণী। দুই বোন—দুজন দুই ভিন্ন খেলায়, কিন্তু মঞ্চ একটাই—বাংলাদেশকে গর্বিত করা।

আফরা বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল ফুটবল খেলার। বিকেএসপিতে সুযোগ না পেয়ে বক্সিংয়ে আসি। তখন মনে হয়েছিল অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি। এখন বুঝি, বক্সিংই ছিল আমার পথ। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক দূর এগিয়ে যেতে পেরেছি। ‘

বোনের সাফল্য নিয়ে গর্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘ও দেশের হয়ে খেলছে—এটা শুধু আনন্দ নয়, অনেক বড় গর্বও। আমরা শুধু খেলাধুলাই না, সব বিষয় নিয়েই খোলামেলা কথা বলি। ‘

খেলাধুলায় আফরার যাত্রা শুরু বাবার হাত ধরে। এরপর সাতক্ষীরায় ‘প্রতিভা অন্বেষণ’ ক্যাম্পে কোচ বাহারের কাছে বক্সিংয়ে হাতেখড়ি। সেখান থেকেই বিকেএসপিতে সুযোগ পান এবং শুরু হয় পেশাদার বক্সিং ক্যারিয়ার।

শুধু ক্রীড়াঙ্গনেই নয়, পড়াশোনাতেও স্বপ্নপূরণে এগিয়ে চলেছেন আফরা। বর্তমানে পড়ছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগে। ভবিষ্যতে কোচিংয়ের দিকেও আগ্রহ রয়েছে তার।

নারী বক্সিং নিয়ে আশাবাদী আফরা বলেন, ‘ক্রিকেট আর ফুটবলের মতো বক্সিংও একদিন এগিয়ে যাবে। এখন জিনাতসহ অনেকেই ভালো করছে। যদি একসঙ্গে ক্যাম্পে থাকতে পারি, তাহলে দেশের বাইরেও ভালো কিছু করে দেখাতে পারব। ‘

সম্প্রতি এক প্রতিযোগিতায় ওয়াকওভার পেয়ে সেমিফাইনালে উঠেছেন তিনি। কার সঙ্গে লড়বেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। বোনের সঙ্গে মজার আলাপে আফরা বলেন, ‘ও বলে, আপু খেলা ছেড়ে দাও, মার খাওয়ার দরকার কী! (হাসি)’

বাবা-মায়ের ভালোবাসা ও সমর্থন দুই বোনেরই শক্তি। তবে আফরা জানান, ‘আমার বোন মাঝে মাঝে বলে, বাবা নাকি শুধু ওকেই বেশি ভালোবাসে, ও-ই নাকি বাবার একমাত্র মেয়ে! তখন পুরো পরিবারেই হাসির রোল পড়ে যায়। ’

ছোটবেলায় ঝগড়া-মারামারির প্রতি আগ্রহ ছিল না তার। এখন অবশ্য রিংয়ের লড়াই বেশ উপভোগ করেন আফরা। খেলার বাইরে বোনের সঙ্গে সম্পর্ক বরাবরই মধুর।

এরই মধ্যে যুব গেমসে সোনা, জাতীয় পর্যায়ে সোনা-রূপা, স্বাধীনতা কাপ ও জুনিয়র পর্যায়ে একাধিক পদক জিতে নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে বাংলাদেশ আনসারের হয়ে খেলছেন এবং জাতীয় ক্যাম্পে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন।

প্রফেশনাল বক্সিংয়ের অভিজ্ঞতাও আছে তার। এবার জাতীয় প্রতিযোগিতা শেষে গঠিত হবে এসএ গেমসের স্কোয়াড। সেই দলে জায়গা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আফরা।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।