ঢাকা, শনিবার, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০০ সফর ১৪৪৭

বিনোদন

উত্তরায় শুটিং হাউজ বন্ধের নোটিশ, নির্মাতা-শিল্পীদের প্রতিবাদ

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:০৩, জুলাই ২৪, ২০২৫
উত্তরায় শুটিং হাউজ বন্ধের নোটিশ, নির্মাতা-শিল্পীদের প্রতিবাদ

নাটক ও সিনেমার শুটিং বন্ধে বাসা মালিকদের চিঠি দিয়েছে উত্তরা সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতি। চিঠির বিষয়টি উত্তরা সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতির সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।

গেল ২০ জুলাই সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, শুটিংয়ের কারণে রাস্তায় জনসমাগম, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চিঠিতে হাউসের মালিকদের শুটিং হাউস হিসেবে বাড়ি ভাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।  

সেখানে আরও বলা হয়, আবাসিক এলাকায় এ ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম নীতিমালার পরিপন্থী। সেক্টরের পরিবেশ ও সুনাম রক্ষায় হাউসের মালিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করা হয়েছে।

শুটিং হাউস বন্ধের চিঠির খবরে সামাজিকমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নাট্য নির্মাতা, অভিনেতা থেকে বিনোদনের অন্যান্য অঙ্গনের তারকারা।  

বিষয়টির প্রতিবাদ করে টেলিভিশন নাটকের শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয় শিল্পী সংঘ’র সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা রাশেদ মামুন অপু বলেন, শুটিং হাউজ মানেই হচ্ছে নিরিবিলি, নয়েজের (হট্টগোল) সঙ্গেই আমাদের শত্রুতা। কারণ শুটিংয়ে আমরা কখনও নয়েজটা কাভার করতে চাই না। শুটিং হাউজ ছাড়াও এই এলাকায় কয়েকটি আবাসিক হোটেলও আছে, স্কুলও আছে। তাই যে কারণগুলো বলা হচ্ছে তা পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা দিয়ে উপস্থাপন করা। আমাদের সংস্কৃতির ওপরে যে নানা ধরনের হামলা হচ্ছে, এই নোটিশ তারই একটা অংশ। আমরা পেশাদার। সবকিছু মেনেই কাজ করি। যদি শুটিং হাউজ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে শিল্পীরা কাজ করবে কোথায়? এর বিরুদ্ধে আমরা লিগ্যাল অ্যাকশনেও যাব।

অভিনয়শিল্পী সংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা রওনক হাসান বলেন, উত্তরা সেক্টর ৪ কল্যাণ সমিতি থেকে শুটিং বন্ধের নোটিশ এসেছে। আবাসিক এলাকায় নানান রকম অফিস হয়। শত শত স্কুল হয়, মাল্টিটাইপ ব্যবসা হয়। শুধু শুটিংয়ে সমস্যা! আগেও এ ধরনের চেষ্টা হয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসন মিলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে সমাধান করেছেন। এবারও আশা করি তাই হবে। সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অভিনেতা ও ডিরেক্টর গিল্ডের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিমের কথায়, এভাবে হঠাৎ করে চিঠির মাধ্যমে শুটিং বন্ধ করার নির্দেশনা কোনোভাবেই উচিত নয়। একটা হাউজে অনেক ধারাবাহিকের শুটিং চলে, অনেক কন্টিনিউটি আছে। তাই হঠাৎ করে বললেই হয় না, একটা সময় দিয়ে বন্ধের চিঠি দিতে পারত। আমরা ডিরেক্টর গিল্ড এর প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজকেই আমরা চিঠি দেব। হাউসের মালিকদের জানিয়েছি, আপনাদের পাশে আমরা আছি।

গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান বলেন, এই শুটিং হাউজে বহু ধারাবাহিক নাটকের কাজ চলছে। হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে ধারাবাহিকতায় সমস্যা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর উত্তরা কল্যাণ সমিতির সঙ্গে বসার পরিকল্পনা রয়েছে।

নির্মাতা তপু খান বলেন, সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা শিল্পসংস্কৃতি বিকাশে বাধার শামিল। সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে অনুরোধ করছি জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। যদি কোনো ত্রুটি বা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। তাই বলে সরাসরি নিষেধাজ্ঞাকে ভালো চোখে দেখছি না।

প্রসঙ্গত, উত্তরা সেক্টর ৪ এলাকায় তিনটি শুটিং হাউজ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- লাবণী-৪, লাবণী-৫ ও আপনঘর-২।  

এনএটি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।