জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘কইলজ্যা কাঁপানো ৩৬ দিন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও সাংস্কৃতিক নির্মাণ’ শীর্ষক এক কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দৃশ্যমাধ্যম সমাজ। আগামী ২ আগস্ট রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত হবে এই বিশেষ সাংস্কৃতিক সম্মিলন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্মাতা আকরাম খান, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, জাহিন ফারুক আমিন, অভিনেত্রী ফারিহা শামস সেওতিসহ অনেকে। উপস্থিত ছিলেন শিল্পী, নির্মাতা, সংগঠক ও নাগরিক সমাজের সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায় রচিত হয়েছিল। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধ, প্রতিবাদ ও কণ্ঠস্বর গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের অভিযাত্রায় এক নতুন পথরেখা তৈরি করেছিল। সেই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের স্মরণে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ‘কইলজ্যা কাঁপানো ৩৬ দিন’ শীর্ষক এক সাংস্কৃতিক কর্মসূচি, যেখানে দৃশ্যমাধ্যম সমাজের সৃজনশীল ও সচেতন সদস্যরা অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে থিয়েটারকর্মী ও শিক্ষক সামিনা লুৎফা স্মরণ করেন, কীভাবে গত বছর ইন্টারনেট বন্ধের মাঝেও সাংস্কৃতিককর্মীরা সংসদ ভবনের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা জানতাম না, কেউ আসবে কি না, কিন্তু দুই থেকে তিন শ মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে। বাধা, মাইক কেড়ে নেওয়ার পরও থিয়েটার পরিবেশন হয়েছিল। এই দৃঢ়তা আমাদের সংস্কৃতিকেই প্রমাণ করে।
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন বলেন, গত বছর অন্যায়, গণগ্রেপ্তার আর সহিংসতা দেখে আমরা আর ঘরে বসে থাকতে পারিনি। ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে হয়েছিল। আমরা হয়তো ভিন্ন ব্যানারে ছিলাম, কিন্তু আমাদের অবস্থান ছিল এক। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের একত্র করেছিল।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার থেকে মুক্তির স্বপ্ন আমরা পেয়েছিলাম, কিন্তু বাস্তবতা এখনো অনেক দূরে। তা সত্ত্বেও আমি আশাবাদ- ভবিষ্যতের ভিন্ন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের একসঙ্গে চলতেই হবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘কইলজ্যা কাঁপানো ৩৬ দিন’ কর্মসূচির তিনটি মূল লক্ষ্য রয়েছে:
১. জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমি, প্রেক্ষাপট ও ফলাফলকে স্মরণ ও বিশ্লেষণ করা।
২. আন্দোলনে দৃশ্যমাধ্যম সমাজের ভূমিকা ও সংহতি তুলে ধরা এবং সদস্যদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন।
৩. সাংস্কৃতিক সংগ্রামের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণ।
এই সম্মিলনের অংশ হিসেবে থাকবে শহীদি মিছিল, লাইফ গ্রাফিতি, আলোচনা সভা, থিয়েটার পারফরম্যান্স, সংগীত, কবিতা পাঠ, ফ্যাসিবাদবিরোধী চলচ্চিত্র উৎসব এবং গণ-অভ্যুত্থানভিত্তিক ছবি, পোস্টার ও মিম প্রদর্শনী।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থাপনা করেন আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার। এতে বক্তব্য দেন নির্মাতা তানিম নূর, সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকলি ইসলাম, প্রযোজক মুশফিকুর রহমান, শিল্পী তানহা জাফরীন, ধ্রুব হাসান, অভিনেত্রী ফারিহা শামস সেওতি, মডেল আসাদুজ্জামান আসাদ ও আনান সিদ্দিকা।
ডিএইচবি/এনএটি