একাধারে একজন শিক্ষাবিদ, গল্পকার, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক; হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের অনবদ্য জীবনের ইতি ঘটল আজ ( শুক্রবার, ১০ অক্টোবর)
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম জন্মেছিলেন সিলেটে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক, চিত্রসমালোচক পরিচয়ের বাইরেও মনজুরুল ইসলামকে অনেকেই অনন্য মানুষ করেন। যিনি বিস্ময়কর মানুষ হিসেবে নিজের দ্যুতি ছড়িয়েছেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই তাঁর লেখালেখি ছিল গভীর। ১৯৯৬ সালে মাত্র ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ এবং ‘থাকা না থাকার গল্প’ নামে তার দুটি বই আসল। এরমধ্যেই তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেন। পরে পেয়েছেন একুশে পদকও।
তার বিষয়ে আনিসুল হক এক কলামে লিখেছেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যারের সবচেয়ে জ্যান্ত গুণ হলো রসবোধ। রবীন্দ্রনাথের মতোই তিনি একটা কথাও বলতে পারেন না, যেটায় হাস্যরস কিংবা বুদ্ধির ঝলক নেই। স্যার বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাবেন, বইমেলায় তাঁর দেখা পেলাম, তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলাম।
তিনি বললেন, ‘শোনো, আমার বাংলা একাডেমি পুরস্কারের খবর প্রচারিত হওয়ার পর আমার বই ১৬ কপি বিক্রি হয়েছে; এটাই বড় পুরস্কার। ’
আনিসুল হক লিখেছেন, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম স্যার অধ্যাপক, ভারী বিষয় নিয়ে সহজ ভাষায় চমৎকার প্রবন্ধ লেখেন, চিত্রকলার আলোচনা লেখেন, গল্প লেখেন, উপন্যাস লেখেন, আবার তরুণদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারেন। এ জন্যই বলছিলাম, তিনি একজন বিস্ময়কর মানুষ। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার জন্য উচ্চ পর্যায় থেকে অনুরোধ করা হয়েছিল। তিনি রাজি হননি। তিনি প্রশাসনিক দায়িত্ব নিতে চান না।
কাচ ভাঙ্গা রাতের গল্প (১৯৯৮), অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প (২০০১), প্রেম ও প্রার্থনার গল্প (২০০৫), সুখদুঃখের গল্প, বেলা অবেলার গল্প, আধখানা মানুষ্য (২০০৬), দিনরাত্রিগুলি, আজগুবি রাত, তিন পর্বের জীবন, নন্দনতত্ত্ব (১৯৮৬), কতিপয় প্রবন্ধ (১৯৯২), অলস দিনের হাওয়াসহ একাধিক গ্রন্থ রয়েছে।
এফএইচ/জেএইচ