ঢাকা, সোমবার, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিক্ষা

যমুনা অভিমুখে শিক্ষকদের মিছিলে জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:০০, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫
যমুনা অভিমুখে শিক্ষকদের মিছিলে জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষকদের মিছিল

ঢাকা: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালটেশন কমিটির সুপারিশকৃত জাতীয়করণ বঞ্চিত প্রায় ৫ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে যমুনা অভিমুখে শিক্ষকরা মিছিল করছিলেন; পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ জলকামানের পানি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়।

 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে গেলে হাইকোর্ট সংলগ্ন কদম ফোয়ারা এলাকায় পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামানের পানি নিক্ষেপ করা হয় এবং পরে তাদের হুইসেল দিতে দিতে পল্টনের দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।  

এর আগে সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষকরা।

এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, ‘২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি তৎকালীন সরকার সারাদেশের সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। তখন সারাদেশে ৩০ হাজারের অধিক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও সে সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কিছু সংখ্যক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হতে বাদ রেখে ২৬,১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। ’

তারা আরও বলেন, ‘২০১৬ সালের ২৮ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখা থেকে উপসচিব গোপাল চন্দ্র দাস স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। স্মারক নং ৩৪৩৬/৯-এখানে বলা হয়েছে, তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণযোগ্য বিদ্যালয়সমূহ জেলা যাচাই-বাছাই করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অবশ্যই প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।  

এর পরে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য একটি চিঠি ইস্যু করা হয়, যার স্মারক নং ০৩.০৭৪.৩৮.০৪৮.০০.০০১.২০১৮-৬৭। এখানে বলা হয়েছে ২৬,১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ তালিকা বহির্ভূত বিদ্যালয়সমূহ/আবেদনসমূহের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সারসংক্ষেপ প্রেরণের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।  

তারা আরও বলেন, পরবর্তীতে ২০২৫ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক দফা আন্দোলন করার পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি ইস্যু করে, স্মারক নং ০৩.০০.২৬৯০.০৭৭.৯৯.০১৫.২৪.০৬-যার এখনো কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  

এমতাবস্থায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে প্রেরিত পত্র ও ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কনসালটেশন কমিটি কর্তৃক অধ্যায় ৪ এর ৪.৩, পৃষ্ঠা নং ৩৫-এর আশু সুপারিশ মোতাবেক জাতীয়করণ বঞ্চিত অনধিক ৫ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য সুপারিশ করার পরেও জাতীয়করণের কোনো অগ্রগতি নেই।  

এ সময় সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. নওশাদ আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা-বান্ধব সরকার। শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিশ্ব দরবারে আজ বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের চিঠি ও কনসালটেশন কমিটির সুপারিশকৃত অনধিক ৫ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জোর দাবি জানাই।  

সাধারণ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মাহবুবা মালা বলেন, জাতীয়করণ না হওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমরা অন্যের শিশুকে পাঠদান করাই, তবে আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি।  

এই অবস্থায় শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষকরা।  

এসসি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।