ঢাকা, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবি, তালা ভেঙে হলে শিক্ষার্থীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবি, তালা ভেঙে হলে শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা একের পর এক হলের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেছেন।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করে ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবি জানিয়েছেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, যেহেতু উপাচার্য (ভিসি) কুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, ব্যর্থতার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন, তিনি ইন্টারনেট, পানি বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দিয়েছেন। ভিসি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার ইন্ধন দিয়েছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছেন তাই আমরা ছয় দফা থেকে এক দফা ঘোষণা করছি। এই ভিসিকে অপসারণ আমাদের একমাত্র দাবি। একই সাথে নতুন ভিসির অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খুলে দেয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিন ধরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা একের পর এক হলের গেটের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন। হলের তালা ভাঙার আগে তারা বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের কাছে হলের তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই হলের তালা খোলার সিদ্ধান্ত নেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কুয়েটের সিন্ডিকেট সভায় যে ৩৭ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে কর্তৃপক্ষ তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি। কেন তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। কী অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাও শিক্ষার্থীদের জানানো হয়নি।

হলের তালা ভাঙা শেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ঘরে আমরা প্রবেশ করেছি। হল খুলে দেওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি প্রশাসনের কাছে। কিন্তু কাজ হয়নি। এখন আমরা প্রশাসনের কাছে আমাদের হলের বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা চালু করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। নিরাপত্তা শাখার পক্ষ থেকে তাদের যদি নিরাপত্তা না দেয় আমরাই আমাদের হলের নিরাপত্তা ও নিজেদের নিরাপত্তা দেব। আমরা কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করব না। বাগবিতণ্ডায় জড়াব না। একটা হলে আমরা রান্নার ব্যবস্থা করব। এ বিষয়ে রাতে আলোচনায় বসব। হলে আইডি কার্ড ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী হলে থাকেন তাদের হলে আসার আহ্বান জানাই।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমরা শিগরিই ক্লাসে ফিরে যেতে চাই, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে চাই। তবে নতুন ভিসির অধীনে।

উল্লেখ্য, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রোববার (১৩ এপ্রিল) বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা,  এপ্রিল ১৫, ২০২৫
এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।