ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২, ৩০ জুন ২০২৫, ০৪ মহররম ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২৯, জুন ২৯, ২০২৫
শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা

ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে সার্বিক আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম তথা ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।

রোববার (২৯ জুন) পৌনে ৬টার দিকে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, আইসিসিবির সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, মেট্রো পলিটন চেম্বারের (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান, এমসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের সিইও সিমিন রহমান প্রমুখ।

বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানও উপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সেবা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সংস্থাটির আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান জানিয়ে সরকার বলেছে, কাজে যোগ না দিলে দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হবে। রোববার সরকার এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে।

সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি।

এ পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  

সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, রাজস্ব সংস্কারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নজিরবিহীনভাবে গত ২ মাস ধরে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি এবং রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অন্যায় ও অনৈতিকভাবে ব্যাহত করে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে আন্দোলনের নামে চরম দুর্ভোগ তৈরি করেছে যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।  

সংস্কারের বিরোধিতা ছাড়াও অর্থ বছরের শেষ দুই মাসে তারা রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এ তথাকথিত আন্দোলন পরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক যা জাতীয় স্বার্থ এবং নাগরিক অধিকারের চরম পরিপন্থি। সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি বিবেচনায় নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয় এবং আলোচনায় আসার আহ্বান জানালেও তারা তা অগ্রাহ্য করে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধান না করে তারা আন্দোলনের নামে অনমনীয় অবস্থান নিয়ে ক্রমাগত দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করে চলেছে।  

এ পরিস্থিতিতে, অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনগুলোর সব শ্রেণির চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস (Essential Services) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  

আমরা আশা করি, অনতিবিলম্বে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দেশের জনগণ ও অর্থনীতির সুরক্ষায় সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে।

জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।