চট্টগ্রাম: নগরের দুঃখ খ্যাত ‘জলাবদ্ধতা’ নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব সেবা সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে সেবা সংস্থাগুলোকে নিয়ে সমন্বয় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় মেয়র জলাবদ্ধতার ক্ষেত্রে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোর সমস্যা নিরসনে সেবা সংস্থাগুলোর মতামত নেন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, আমি সব সেবা সংস্থাকে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।
মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন রোডের কাজগুলো আমাদের করতে হবে। সিডিএর ওইখানে হাজীপাড়া রোড ড্রেইনের কাজটা আমার মনে হয় একটু ধীরগতিতে হচ্ছে। সিডিএ যদি ওখানে নালার পাশাপাশি রাস্তার কাজটাও করে দেয় তাহলে একটা ফুল প্লেজের কাজ হবে। চাকতাইখাল ভেরি ইম্পর্টেন্ট। আগে ক্লিন করা হয়েছে কিন্তু ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রবলেম সেখানে হয়েছে। চকবাজারের কিছু এলাকায় পানি উঠেছে খাল-নালা অপরিষ্কার থাকার জন্য। হিজড়া খালের জন্যও জলাবদ্ধতা হয়েছে। স্লুইচগেটগুলো ফাংশনাল করতে হবে। বিভিন্ন নালায় পিডিবির পোল থাকায় পানি দ্রুত নামে না এগুলো সরাতে হবে। আমরা পুলিশকে চিঠি দেব জিইসি থেকে দুই নাম্বার গেটে মাদকসেবীরা গ্রিল, নাট, ডাস্টবিন ইত্যাদি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে যাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের ইকুইপমেন্টের ঘাটতি আছে। ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে। এগুলো সমাধান করতে হবে। আমি সরেজমিনে সব জলাবদ্ধতা প্রবণ এলাকাগুলোয় ভিজিট করেছি। পুরকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীরা স্ব-স্ব এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকৌশলগত সমাধান নিশ্চিত করবেন। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলবেন যেটিতে সব সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা যুক্ত থাকবেন সেখানে সমস্যা হওয়ার সাথে সাথে জানাবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন। খালগুলোর মুখ পরিষ্কার করার বিষয়ে নৌবাহিনী এবং বন্দর কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে হবে। ইতোমধ্যে নৌবাহিনী আগ্রাবাদের বক্স কালভার্ট পরিষ্কারে কাজ করছে যা নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, কর্ণফুলীর ডাউন স্ট্রিমে ড্রেজিং করতে হবে যাতে দ্রুত পানি অপসারিত হয়। সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্প নিরসন প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পটি নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বন্দরের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার মো. ওবায়দুর রহমান, বন্দর চেয়ারম্যান মহোদয় বলেছেন প্রজেক্ট নেওয়ার জন্য। যেটা শুধু খালগুলোর মুখকে টার্গেট করে কাজ করবে। এটা আমাদের টেন্ডার হয়ে গেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালগুলোর মুখ ক্লিয়ার করা শুরু হবে। অস্ট্রোনমিক্যাল টাইড বলে একটা বিষয় আছে। এটা হলে আমরা যতই চেষ্টা করি এই পানি ওই ছয় ঘণ্টায়ও আমরা নামাতে পারব না। এজন্য এই খালগুলো দিয়ে আমরা রেগুলেট করি স্লুইসগেট ব্যবহার জোয়ারের সময় তাহলে পানি ঢোকার কোন চান্স নাই। আর যখন ভাটা শুরু হবে সাথে সাথে এগুলা আনলক করে দিই তাহলে যে পানিটা জমা হচ্ছে বৃষ্টি বাদে তাহলে এই পানিটা আর থাকবে না। একটা উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি আমাদের বানৌজা ঈসা খা ইনক্লুডিং আমাদের দুইটা কলোনি। আমরা এটা ২০১৭ সাল থেকে এইভাবে মেনটেন করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের এই এত বড় তিনটা বেসে কোনো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি শুধু রেগুলেট করার কারণে। আমরা বিভিন্ন সময় যে আমাদের ওয়েস্টেজগুলো ফেলছি খালগুলোতে এটা যদি আমরা আরেকটু কন্ট্রোল করতে পারি আমার মনে হয় এটা মেইনটেন করা সম্ভব।
বক্তব্য দেন মেয়রের জলাবদ্ধতা বিষয়ক উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদ, আইইবি চট্টগ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
এআর/টিসি