চট্টগ্রাম: ‘আমি প্রতিদিন ৩০-৪০টি কল পাই, যেখানে বাসা থেকে ময়লা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। মানুষ বলছে—টাকা দিচ্ছি, ময়লা নিচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
টাইগারপাসে চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি ও উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা।
কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, নগরে বাসাবাড়ি থেকে ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহে দীর্ঘদিন ধরে চলা নৈরাজ্য ও ইচ্ছামতো টাকা আদায় রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। চসিকের নতুন নীতিমালার আওতায় বাসা-বাড়িগুলো থেকে ন্যূনতম হারে সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে দেওয়া হবে না। ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহে সেবা নিশ্চিতে ৪১টি ওয়ার্ডের জন্য দরপত্র আহ্বান করে ১৯২টি দরপত্র বিক্রি হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিজ্ঞ ও সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত হারে ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রথমে সতর্কতা, পরে চুক্তি বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য নগরবাসীকে একটা সহনীয়, সুশৃঙ্খল ও নিরবচ্ছিন্ন পরিচ্ছন্নতা সেবা দেওয়া।
নগরে চলমান জলাবদ্ধতার জন্য বাসাবাড়ি থেকে যত্রতত্র ময়লা ফেলা এবং অপরিকল্পিত আবর্জনা ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে তিনি বলেন, ড্রেন পরিষ্কারের পর আবার ময়লা জমে। কারণ, অনেকে জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দেয়। আমরা চাই এই ব্যবস্থাকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে।
এ সময় চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে কিছু কোম্পানি মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে ২-৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে অথচ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই। আরেকটি প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে রিট করেও কিছু এলাকায় তারা কাজ বন্ধ রাখছে। আমরা আইনি পথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি জানান, নতুন সিস্টেমে প্রতিটি কোম্পানিকে শ্রমিকের বেতন, গাড়ির সংখ্যা ও এলাকা অনুযায়ী সক্ষমতা যাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে। বিশেষ করে যাদের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের নিজস্ব যানবাহন ও ইকুইপমেন্টের সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক যন্ত্রপাতি ২০-২৫ বছরের পুরোনো। স্কেভেটর বা চেইন ডোজার ভাড়া করে ময়লা সরাতে হচ্ছে। নাগরিকদের সেবায় এই খাতে আরও বরাদ্দ প্রয়োজন।
এআর/টিসি