চট্টগ্রাম: চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া গ্রামের প্রদীপ চৌধুরী (৬৬) চেয়েছিলেন মৃত্যুর পর তাঁর চোখে পৃথিবী দেখবে অন্ধজন। সেই ইচ্ছে পূর্ণ হয়েছে চক্ষুদানের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের প্রচেষ্টায় তাঁর মৃত্যুর পর সংগ্রহ করা হয়েছে দুটি কর্ণিয়া।
বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে মেয়ে প্রজ্ঞা লাবনী চৌধুরী যোগাযোগ করেন সন্ধানীর সাথে।
সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তানভিন আম্মার জানান, ‘মৃত্যুর আগে প্রদীপ চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা ছিল- নিজের চোখের কর্ণিয়া কাউকে দান করার মাধ্যমে যেন তাঁর চোখের আলোয় আলোকিত হওয়ার সুযোগ পায় অন্য এক মানুষের আঁধার পৃথিবী। আমরা তাঁর কর্ণিয়া সংগ্রহ করেছি। এই কর্ণিয়া হয়তো অন্ধ মানুষকে দৃষ্টির আলো উপহার দেবে’।
তানভিন আম্মার বলেন, আমরা মূলত রক্ত নিয়ে কাজ করি। আমাদের সূচনা হয়েছিল রক্ত নিয়ে। তবে এখন আমরা মরণোত্তর চক্ষুদানের কাজও করছি। অনেকবার কর্নিয়া সংগ্রহ করেছি। ২০২৪-২৫ সেশনে তৃতীয়বার কর্নিয়া সংগ্রহ করলাম। এসময় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩টি কর্ণিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে।
কর্ণিয়া সংগ্রহকালে উপস্থিত ছিলেন সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের উপদেষ্টা ডা. ওমর ফয়সাল, সভাপতি মিথিলা বণিক এবং সন্ধানীয়ানরা।
যারা মারা যাওয়ার আগে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, তাদের একটি অঙ্গীকারনামা নেওয়া হয়। পরে তাদের একটি কার্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করলে ৬ ঘণ্টার মধ্যে কর্ণিয়া সংগ্রহ করতে হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
দেশে বছরে গড়ে ১৪ লাখের বেশি মানুষ কর্নিয়া অস্বচ্ছ হয়ে অন্ধত্ব বরণ করে। ১৯৮৯ সালে শ্রীলংকার মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথপ্রদর্শক ডা. হাডসন সিলভার বাংলাদেশে আসার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামেও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি গঠিত হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার কর্নিয়া সংগ্রহ করে ৪ হাজারের অধিক মানুষের চোখে আলো ফিরিয়ে দিয়েছে সন্ধানী।
এসি/টিসি