বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) অংশ নেওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি চিটাগং কিংসের কাছে বিপুল অঙ্কের পাওনা দাবি করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের হিসাবে, তিনটি আসরে বিভিন্ন খাতের বকেয়া অর্থ ও দীর্ঘদিনের সুদ মিলিয়ে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে পাওনা ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ মার্কিন ডলার, যা বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রায় ৪৬ কোটি টাকা।
প্রথম দুই আসরে খেলার পর নানা অভিযোগ ও চুক্তিভঙ্গের কারণে চিটাগং কিংসকে বাদ দেয় বিসিবি। তবে গত বছর বিসিবির প্রশাসনে পরিবর্তনের পর আবারও মাঠে ফেরে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সে সময় বিসিবি দাবি করেছিল, পুরনো পাওনার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে। পরবর্তীতে সেই সমঝোতার অঙ্কও কমানো হয়, তবু অর্থ পরিশোধ হয়নি।
বিসিবির সর্বশেষ ব্যাখ্যায় জানানো হয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত চিটাগং কিংসের সত্ত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান এস.কিউ. স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডকে একাধিকবার তাগাদা ও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালের ৭ মে সালিশি নোটিশ এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের ২২ জুলাই দেওয়া আইনি নোটিশ। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজিটি বারবার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ বিসিবির। পাওনার মধ্যে রয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর, ক্রিকেটার ও দলের অন্যান্য সদস্যদের পারিশ্রমিক।
গত সেপ্টেম্বরে সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধানের জন্য নতুন একটি চুক্তি করেছিল বিসিবি ও চিটাগং কিংস। তবে সেই চুক্তির অর্থও ফ্র্যাঞ্চাইজিটি শোধ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে বিসিবি ২২ জুলাইয়ের নোটিশে চুক্তি বাতিল করে পুরো পাওনা দাবি করে। বিসিবির হিসাব অনুযায়ী, মূল পাওনা ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৫ মার্কিন ডলার এবং ১৩ বছরের সুদ ২২ লাখ ৩২ হাজার ৯২ মার্কিন ডলার।
বিসিবি জানিয়েছে, ডলারের বিপরীতে টাকার মান গত ১৩ বছরে অনেক কমে যাওয়ায় সেই সমন্বয়ও হিসাবের মধ্যে রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রথম দুই আসরের পাওনার ওপর সুদ যোগ করে মোট দাবিকৃত অঙ্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, চিটাগং কিংসের মালিক সামির কাদের চৌধুরি জানিয়েছেন, ৪৫-৪৬ কোটি টাকার হিসাব তিনি বুঝতে পারছেন না। বিসিবির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করতে চান বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পাওনা বকেয়া শুধু পুরনো আসরেই সীমাবদ্ধ নয়। সর্বশেষ বিপিএলেও ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, হোটেল ও অন্যান্য সেবা প্রদানকারীর কাছে অর্থ বাকি রয়েছে বলে বিসিবি জানিয়েছে। এসব নিয়ে নিয়মিত অভিযোগ ও নোটিশ আসছে বোর্ডের কাছে।
তবু গত আসরে মাঠের পারফরম্যান্সে চমক দেখিয়ে রানার্স আপ হয়েছিল চিটাগং কিংস, যদিও আসরজুড়ে তারা ছিল নানা বিতর্কের কেন্দ্রে।
আরইউ