ত্রিনিদাদে মঙ্গলবার ইতিহাস গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তানকে তৃতীয় ওয়ানডেতে ২০২ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল তারা।
সর্বশেষ ১৯৯১ সালের নভেম্বরে রিচি রিচার্ডসনের নেতৃত্বে পাকিস্তান সফরে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল ক্যারিবিয়ানরা। এরপর দুই দলের ১১ ওয়ানডে সিরিজের একটি শেষ হয়েছিল সমতায়, বাকি ১০টিতেই জয় পেয়েছিল পাকিস্তান।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথম ৩০ ওভারে রান আসে মাত্র ১১০ রান। এরপরই শুরু হয় রানের ঝড়। অধিনায়ক শাই হোপ অপরাজিত ১২০ রান করেন ৯৪ বলে, ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০ চার ও ৫ ছক্কায়। সপ্তম উইকেটে জাস্টিন গ্রেভসের সঙ্গে মাত্র ৫০ বলে তিনি যোগ করেন ১১০ রান। গ্রেভস অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৪৩ রানে।
রানের গতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন রোস্টন চেইসও। শেষদিকে ২৯ বলে করেন ৩৬ রান। শেষ ৭ ওভারে দল যোগ করে ১০০ রান। ইনিংস শেষ হয় ২৯৪ রানে।
বোলিংয়ে নেমে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন জেডেন সিলস। প্রথম স্পেলেই পাকিস্তানের টপ অর্ডার ধসিয়ে দেন। তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ১৮ রানে ৬ উইকেট; যা ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইতিহাসে তৃতীয় সেরা। এই তালিকায় প্রথম স্থানে আছেন উইনস্টন ডেভিস (৭/৫১, ১৯৮৩), দ্বিতীয় স্থানে কলিন ক্রফট (৬/১৫, ১৯৮১)।
রান তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। সাইম আইয়ুব, আবদুল্লাহ শাফিক ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ফেরেন শূন্য রানেই। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন বাবর আজম, কিন্তু ৯ রানেই থামতে হয় তাকে।
সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে সালমান আলি আগার ব্যাট থেকে। পাকিস্তানের আট ব্যাটারই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে ব্যর্থ, যার মধ্যে পাঁচজনই আউট হন শূন্য রানে। শেষ পর্যন্ত পুরো দল গুটিয়ে যায় ৯২ রানে।
শেষ উইকেটটি আসে আবরার আহমেদের রান আউটে, রোস্টন চেইসের সরাসরি থ্রো ভেঙে দেয় স্টাম্প। এর মধ্য দিয়েই শেষ হয় দীর্ঘ অপেক্ষার জয়, মাঠে শুরু হয় ক্যারিবিয়ানদের উচ্ছ্বাস।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা ৮ ম্যাচ হারের পর পাকিস্তানের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও প্রথম ওয়ানডে হেরে চাপের মুখে ছিল দলটি। এই পরিস্থিতিতে কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, ডেসমন্ড হেইন্স ও শিবনারাইন চান্দারপলকে নিয়ে বোর্ড আয়োজন করে জরুরি কৌশলগত বৈঠক। এর ফল মেলে দ্বিতীয় ওয়ানডে থেকেই, যা বৃষ্টিবিঘ্নিত হলেও জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে পুরোনো দিনের ছাপ ফিরিয়ে আনে শাই হোপের দল।
আরইউ


