বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তারিক কাজী শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। বকেয়া বেতনের কারণে আইনগতভাবে চুক্তি বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে এই ডিফেন্ডার জানান, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনিশ্চয়তা ও বিলম্বিত বেতন পরিস্থিতি তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
তবে তার এই বিদায়কে মর্যাদার সঙ্গে গ্রহণ করেছে বসুন্ধরা কিংস। ক্লাবের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারিক কাজীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮ সালে বসুন্ধরা কিংস তারিক কাজীকে খুঁজে বের করে এবং তার প্রোফাইল যাচাইয়ের পর বাংলাদেশে আনার উদ্যোগ নেয়। তার কাগজপত্র প্রক্রিয়াজাত করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে সহায়তা করে, যার ফলেই ২০২১ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় দলে তার অভিষেক ঘটে। '
বসুন্ধরা কিংস আরও জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় দলের একজন প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার থেকে নিয়মিত খেলোয়াড়ে পরিণত হওয়া তারিকের পারফরম্যান্সে তারা গর্বিত। ক্লাবের হয়ে একাধিক ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করাও তার নেতৃত্বগুণের প্রমাণ দিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ, তারিক কাজী ও বসুন্ধরা কিংস ৬ বছরের সফল যাত্রার পর আলাদা হয়ে গেলেন। এই সিদ্ধান্ত এসেছে তারিকের পক্ষ থেকে, এবং আমরা তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। আমরা তার দীর্ঘদিনের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞ এবং তার ভবিষ্যৎ জীবন ও ক্যারিয়ারের জন্য শুভকামনা জানাই। '
২০১৯ সালে ফিনল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের পর বসুন্ধরা কিংসের হয়ে যোগ দেন তারিক। এরপর থেকেই ক্লাব ও জাতীয় দলের রক্ষণভাগের অন্যতম নির্ভরযোগ্য নাম হয়ে ওঠেন তিনি। কিংসের জার্সিতে চারটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছেন এই ফিনল্যান্ড-জন্ম নেওয়া ফুটবলার, যিনি এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ৩৩টি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন।
নিজের পোস্টে তারিক লিখেছিলেন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনিয়মিত ও বিলম্বিত বেতন পেয়ে চলেছি। এটি শুধু আর্থিক সমস্যা নয়, ছিল মানসিক চাপও। কিন্তু সবুজ-লাল জার্সি গায়ে মাঠে নামা সবসময় আমাকে নতুন অনুপ্রেরণা দিয়েছে। '
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই বিদায় রাগ থেকে নয়, বরং সত্য, মর্যাদা ও কৃতজ্ঞতা থেকে এসেছে। আমি বসুন্ধরা কিংস ছাড়ছি গর্ব নিয়ে, কষ্ট নিয়ে নয়। '
বসুন্ধরা কিংসের শুভকামনা বার্তা এবং তারিকের মর্যাদাপূর্ণ বিদায় উভয়ই প্রমাণ করে, এই ছয় বছরের সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক সম্মান ও সাফল্যে পরিপূর্ণ।
এআর