ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

দেয়ালে মাথা ঠুকে-পিটিয়ে নৈশপ্রহরীকে হত্যা, তিনজন গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:৫৬, অক্টোবর ২৩, ২০২৫
দেয়ালে মাথা ঠুকে-পিটিয়ে নৈশপ্রহরীকে হত্যা, তিনজন গ্রেপ্তার প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগ তুলে হানিফ (৩০) নামে স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে তোলপাড় চলছে।

ওই হত্যাকাণ্ডে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যদিও অভি নামে প্রধান আসামি এখনো পলাতক।

গত ১৯ অক্টোবর বিকেলে শহরের খানপুর জোড়াটাংকি এলাকায় হানিফকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে পেটায় অভিযুক্তরা। দীর্ঘক্ষণ নির্যাতন করার পর বিকেল ৩টায় আবু হানিফকে পার্শ্ববর্তী খানপুর হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। এসময় চিকিৎসক হানিফের অবস্থার অবনতি দেখলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে রাত ৮টার দিকে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় হানিফের।

জানা যায়, স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে পূর্ববিরোধ ছিল আবু হানিফের। গত ১৯ অক্টোবর বিকেলে ধর্ষণের অভিযোগে তারাই আবু হানিফকে জোড়া টাংকি এলাকায় নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে।

এদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- নবাব সিরাজউদ্দৌলা রোডের সফিকুল ইসলাম মুন্নার ছেলে মুশফিকর রহমান জিতু (২৯), ডন চেম্বার  মোবারক ভিলার ভারাটিয়া ফরচানের ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৬) ও মো. বাহার (৩২) ।

তদন্তের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হানিফকে তার নিজ ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় লাথি ও আঘাত করে বিছানা থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তাকে মারধর করে নাসিকের ওয়াসার জোড়া পানির ট্যাংকি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযুক্তরা অভিযোগ করে, হানিফ ১২–১৩ বছর বয়সী এক মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। যদিও তার পরিবারের দাবি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। ধর্ষণের অভিযোগ আনা হলেও সেই শিশুটিকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

হানিফের বোন রাবেয়া বলেন, আমার ভাই হানিফ খানপুরের জিতু ভিলায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন। সোমবার দুপুরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় অভিসহ কয়েকজন তাকে আক্রমণ করে। মাথা দেয়ালে আঘাত করা হয় এবং পরে জোড়া পানির ট্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের দাবি ছিল, হানিফ একটি কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে, কিন্তু সে মেয়েটি সুস্থ ও স্বাভাবিক। আমার ভাইকে পিটিয়ে হত্যার কোনো যুক্তি নেই।

রাবেয়া আরও বলেন, আমাকে ও আমার স্বামী ইবরাহিমকে ট্যাংকের পাশে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে অভি আমার স্বামীকে মারধর করে, লুঙ্গি খুলে ফেলার চেষ্টা করে এবং নানা ধরনের হুমকি দেয়। পরে সন্ধ্যায় খবর পাই, হানিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি এবং স্বামী হাসপাতালে গিয়ে তার লাশ দেখি।

হানিফের ভগ্নিপতি ইবরাহিম বলেন, দুপুরে শ্যালিকা ফোনকল দিয়ে জানায় হানিফকে মারধর করা হচ্ছে। পরে বাসায় এসে দেখি তিনি নেই। এরপর আবার বাসায় ফিরে দেখি আমাদের ওপরও আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের কাছে টাকা দাবি করা হয়, না দেওয়ায় তারা হানিফকে একটি অটোতে তুলে নেয়।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এমআরপি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।