বরিশালে শিশু শ্রম নিরসনে তারুণ্যের ভূমিকাবিষয়ক কর্মশালা ও দুস্থ শ্রমিকদের মাঝে চেক বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হল্টকে সম্মাননা প্রদান করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
সফিকুজ্জামান বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ শিশু শ্রমে জড়িত, এর মধ্যে সাড়ে ৫ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। আমাদের আইনে বলা আছে—কোনোভাবেই শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ করা যাবে না। তারপরও আমরা এখনো পুরোপুরি উত্তরণ করতে পারিনি। তবে আমরা চাই, দেশের তৃতীয় জেলা হিসেবে বরিশালকে শিশু শ্রমমুক্ত ঘোষণা করতে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত না রেখে তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।
সফিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকার শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু যেন এসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত না হয়। তারা বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাবে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশু শ্রমমুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সবাই যদি অন্তত একজন শিশুর দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল অনেকাংশে শিশু শ্রমমুক্ত হবে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জাহেদা পারভীন এবং বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিশু শ্রম নিরসনে তারুণ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। পরে অতিথিরা কর্মশালার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে আলোচনা করেন।
শেষে ৫৭ জন দুস্থ শ্রমিকের মাঝে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা করে মোট ২৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা।
এমএস/আরবি