গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সাঘাটা থানার পাশের পুকুর থেকে সিজু মিয়া নামে এক শিবির নেতার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওসিসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নিহতের মা রিক্তা বেগম বাদী হয়ে গাইবান্ধার আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদ হাসান জানান, আদালতের বিচারক পাপড়ী বড়ুয়া মামলাটি তদন্ত করার জন্য সিআিইডকে নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন, সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলম, এসআই রাকিবুল, মশিউর, লিটন মিয়া, উজ্জল, এএসআই মহসিন আলী সরকার, আহসান হাবীব, লিটন, কনস্টেবল হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, কর্ম ধর্ম চন্দ্র, স্থানীয় সাব্বির, ইউসুফ আলী ও মমিনুল ইসলাম।
নিহত সিজু মিয়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের বাগুড়িয়া গ্রামের দিনমজুর দুলাল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিজু গিদারী ইউনিয়ন শিবির সভাপতি ছিলেন।
গত ২৫ জুলাই সকালে সাঘাটা থানার পাশের সাঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে কচুরিপানায় নিচ থেকে সিজুর লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি থানায় ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা এবং অস্ত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে পাশের পুকুরে ঝাঁপ দেন। থানার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সিজু একজন কনস্টেবলের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েকজন তাকে ধরতে এলে তাদের ওপরও চড়াও হন। এ সময় পুলিশকে ছুরিকাঘাতের দাবিও করা হয়।
সে সময় পুলিশ জানায়, একটি চোরাই মোবাইল কেনেন সিজু। প্রযুক্তির সহায়তায় তা জানতে পেরে সিজুকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। তিনি জানান, মোবাইল ফোনটি তিনি স্থানীয় একটি দোকান থেকে কিনেছেন। পরে দোকানিকেও ডেকে নেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের রাইফেল ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও বাধা দিতে গেলে ছুরিকাঘাত করে পালাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, পুরোনো একটি মোবাইল ফোন কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে সিজুকে ফোনে থানায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে, সিজুর লাশ উদ্ধারের পরদিন পুকুরে সিজুকে পুলিশ পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়৷ সেই দিনই গাইবান্ধা পুলিস সুপারের কর্যালয় ঘেরাও করে এলাকাবাসী৷
ঘটনাটি তদন্তে চলতি মাসের প্রথম দিকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত ২৯ জুলাই সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কমিটির প্রধান রংপুর রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনসহ রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুনা লায়লা ও শরিফুল ইসলাম৷
তদন্তের কোনো অগ্রগতি না থাকায় ও সিজু হত্যায় জড়িতদের পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিহতের মা ঘটনার প্রায় মাস পরে আদালতে আজ এ মামলা দায়ের করেন।
জেএইচ