কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় জুতা ব্যবসায়ী মো. ইউছুপ ভুঞা টিপুকে (২৮) গুলি করে হত্যার দায়ে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়াও আরও ছয়জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মরকোটা গ্রামের মৃত ডা. আবুল হাসেমের ছেলে মেহেদী হাসান জামশেদ (২১) ও একই উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়া গ্রামের মনির আহাম্মদ ডিলারের ছেলে শহীদুল ইসলাম মাসুম (৩২)।
এছাড়াও ১০ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফেনী সোনাগাজী উপজেলার চান্দলা পাটোয়ারী বাড়ির প্রয়াত আবুল কালামের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী (৩২), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গাংরা গ্রামের মৃত আবদুল হালিমের ছেলে মো. জামাল হোসেন মানিক (৩১) ও ধোরকড়া গ্রামের প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. একরামুল হক মিলন (৪১), নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মঙ্গলকান্দি গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে বড় মিয়া (৪৫), ফেনী সোনা গাজী উপজেলার সহদিয়া গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে মো. আলাউদ্দিন তোতা (২৮) ও চট্টগ্রাম মীরসরাই উপজেলার পশ্চিম সোনাই গ্রামের প্রয়াত মুজাফফর হোসেনের ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন (৩৮)। দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৬ মে দিবাগত রাত ২টার সময় ভিকটিম মো. ইউছুপ ভুঞা টিপু ঘরের বাইরে গেলে ওত পেতে তাকা ডাকাতদল তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তারাশাইল গ্রামের নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলী (৭৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মহিউদ্দিন, এসআই মো. মোবারক হোসেন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চারজনকে গ্রেপ্তার করেন। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
এছাড়াও একই মামলার আরও ছয়জন আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ মামলায় মোট ১৭ আসামির মধ্যে মামলা চলাকালীন আসামি ইব্রাহিম, তাজু ও আবদুল রাজ্জাক মারা যান। আসামি আবুল হাসেম ভুইয়া ভুটু, মো. দুলাল, ফারুক হোসেন, ইলিয়াস ভূঁইয়া, আবুল কাশেম ও সাইফুলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইফতেখার হোসেন, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইকরাম হোসেন এবং অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন আহমেদ টিপু।
আরএ