রাঙামাটি: অবশেষে অনেক আক্ষেপ, কষ্ট আর স্বজনদের অশ্রুজলে বিদায় জানানো হলো রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী উক্য চিং মারমাকে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজ পাড়ার নিজ বাড়ির পারিবারিক শ্মশানে তার দাহক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
দাহক্রিয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন উক্য চিংয়ের মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজন। তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে আকাশ-বাতাস। পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের মাতম।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান বাবা উসাইমং মারমা। অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছার পরই উক্য চিংকে শেষবারের মতো দেখার জন্য ভিড় করেন শত শত মানুষ।
বুধবার সকাল থেকে উক্য চিংয়ের বন্ধু ও স্বজনরা তার কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান এবং তার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মরণ করেন।
উক্য চিংয়ের বাবা, রাজস্থলী উপজেলা আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক উসাইমং মারমা বলেন, আমার বলার ভাষা নেই। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আমি বাকরুদ্ধ। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ঢাকায় পাঠিয়েছিলাম। ছেলে বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হবে। ওর স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।
মা তেজিপ্রু মারমা, বান্দরবান রুমা উপজেলার ক্যাটেইন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সব শেষ। কী নিয়ে বাঁচব আমি? আমার ছেলে আর কোনোদিন আমার কাছে ফিরবে না।
নানাভাবে লালন-পালন করা দাদি ক্রাপ্রু মারমা বলেন, নাতিকে ছোটবেলা থেকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করেছি। তার এমন নৃশংস মৃত্যু হবে কখনও ভাবিনি।
গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে দগ্ধ হন উক্য চিং মারমা। শতভাগ দগ্ধ অবস্থায় তাকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতে রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাহাড়ের এই কিশোর।
এসআরএস