সিলেট: সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চান। তিনি জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, টিমওয়ার্ক, দূরদর্শী পরামর্শ ও সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নুরপুর গ্রামে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সংস্কার সংস্কার বলে গলা ফাটিয়ে লাভ নেই। রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশেও বিএনপি বহু আগে থেকেই সংস্কারের জন্য কথা বলেছে। বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের দফা জনগণের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আবারও আমরা একটি মুক্ত-স্বাধীন দেশে বাস করবো—এই প্রত্যাশা নিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে তার নির্দেশে সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে সিলেটের নেতাকর্মীরা সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করেছে। সেদিন পুলিশি হামলা, গুলিবর্ষণ ও সহিংসতার মুখে আমরা এক চুলও পিছু হটেনি। সেদিন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি এবং পরবর্তী আড়াই মাস ধরে চলা আন্দোলনে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের নির্যাতন, মামলা ও গ্রেপ্তারসহ নানা ধরনের বাধা সত্ত্বেও রাজপথ ছাড়েননি।
তিনি আরও বলেন, এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন, একজন প্রাণ হারিয়েছেন, শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ফ্যাসিস্টদের নির্বাচন বয়কটের সময় সারা দেশের মতো সিলেট আন্দোলনমুখর জনপদে রূপ নিয়েছিল।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের আমলে যারা নির্বাচন করেছে কিংবা যেকোনোভাবে সহযোগিতা করেছে তাদেরও প্রতিহত করতে হবে। তখন যারা রাতে আওয়ামী লীগ, দিনে বিএনপি করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্ব চলবে না। দল করলে দলীয় শৃঙ্খলা মানতে হবে। ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। দলের শৃঙ্খলা বিরোধীদের একদিনও দলে করতে দেব না, তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে খালেদা জিয়া সরকার থাকার সুবাদে ফেঞ্চুগঞ্জে বহু উন্নয়ন হয়েছে। তখন ফেঞ্চুগঞ্জের রাস্তাঘাট সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে রূপান্তরিত হয়েছিল। যাদের কোনোদিন দলের আন্দোলনে দেখা যায়নি, তারা দলের ভুলভাল পরিচয় দিয়ে জনগণের সামনে দাঁড়াচ্ছে। তারা এভাবে দাঁড়াতে পারবে না, ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সামনে গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে দল যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। তা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্ধারণ করবেন। তার আগে অমুক ভাই তমুক ভাই বলে দলকে যারা বিভক্তির রেখায় টানছেন তাদের বিরুদ্ধে দল প্রমাণ সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনায়েত হোসেন রুহেল। পরিচালনা করেন উপজেলা ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিন আহমদ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কুহিনূর আহমদ ও সহ-দপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ইফতেখার উদ্দিন ফেদল, সহ-সভাপতি মহিবউদ্দিন বেলাল, রেজাউর রহমান চৌধুরী রাজু, ফখরুল ইসলাম পাপলু, সাদিকুর রহমান টিপু, জিয়াউল হক জিয়া, সাহেদ উদ্দিন মেম্বার, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম জুয়েল, আতাউর রহমান চৌধুরী মনাই, জামাল আহমদ চৌধুরী, আকরাম হোসেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আছাদুর রহমান, রুহুল আমিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাজু আহমেদ খান, এহসান সাহেদ, সিপন আহমদ পাঠওয়ারী, জহিরুল ইসলাম তানিম, ৫ নম্বর উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সঞ্জিদ আলী, জেলা কৃষকদলের সদস্য ইউসুফ আলী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদুল হাসান চৌধুরী, বদরুল ইসলাম খান, তুহিন চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক দিনার আহমদ শাহ, শেখ ওয়েছ আহমদ মিটু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৫
এনইউ/আরবি