ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক মির্জা আব্বাস ও সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
শনিবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান।
দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতার ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নাশকতা করে বারবার বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, অবৈধ সরকার স্বৈরাচারের সর্বোচ্চ সীমানা অতিক্রম করেছে। যার সর্বশেষ অমানবিক, ন্যক্কারজনক নজির হলো খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিভিন্ন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সরকারের মন্ত্রী শাহজাহান খানের ঘোষণার ১২ ঘণ্টার মাথায় রাতের আঁধারে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আইনের শাসন নেই। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও প্রশাসন সরকারের অবৈধ নির্দেশনা অনুযায়ী চলছে। সরকারের এ ধরনের ন্যাক্কারজনক, ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তারা বলেন, খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা এবং ২০ দলের কর্মসূচিতে মানুষের সমর্থন দেখে সরকার হিংস্র হায়নার মতো আচরণ করছে। আন্দোলন এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, যেকোনো সময় গণবিস্ফোরণের মাধ্যমে সরকারের বিদায় হবে। এ বিষয়টি টের পেয়ে সরকার যখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে দমাতে পারেনি, তখন তার কার্যালয় ঘিরে নৈরাজ্য শুরু করেছে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হয়েছে।
মন্ত্রী শাহজাহান খান শনিবার (৩১ জানুয়ারি) আবারও বলেছেন, খালেদা জিয়ার খাবার সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হবে। এর অর্থ হলো- ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে গায়ের জোরে ক্ষমতাসীন হবার পর সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতনের ষ্টীমরোলার চালিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন না, এখন তারা খালেদা জিয়াকে তারা নানাভাবে নির্যাতন করছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীনদের বিষাক্ত ছোবল ও আগ্রাসন থেকে জাতিকে এখনই মুক্ত করতে না পারলে স্বৈরাচারী শাসন আরো দীর্ঘ হবে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে পড়বে।
বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে নেতারা বলেন, ইতোমধ্যে রিজভীকে নানাভাবে হয়রানি করেছে সরকার। এভাবে হামলা-মামলা ও গ্রেফতার করে আন্দোলন দমানো যাবে না।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রিজভীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। তারা বলেন, অবিলম্বে সকল কারাবন্দি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিয়ে সংলাপে বসার আহ্বান জানান।
শুক্রবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা ৪২ মিনিটে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
শনিবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে কেবল টিভি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সংযোগও।
বিএনপি চেযারপারসনের মিডিয়া উইং সূত্র বাংলানিউজকে এ খবর নিশ্চিত করে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৫