ঢাকা, রবিবার, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ জুলাই ২০২৫, ২৪ মহররম ১৪৪৭

রাজনীতি

প্রশ্ন তারেক রহমানের

অন্তর্বর্তী সরকার আদৌ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:৪৪, জুলাই ২০, ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকার আদৌ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে কি না

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো একটি অংশের সহায়তায় দেশে কেউ উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে সরকারের প্রতিশ্রুত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কেউ সময়ক্ষেপণ করতে চাইছে কি না সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহবান জানান তিনি।

গতকাল শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী আয়োজিত আলোচনাসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান ও শহীদদের স্মরণে’ শিরোনামে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘সরকারের কোনো একটি অংশের সহায়তায় কেউ কেউ দেশে উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে কি না, সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের কথা শুনলে বোঝা যায়, এ বিষয়েও জনমনে জিজ্ঞাসা রয়েছে। ’

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সংঘটিত কিছু নৃশংস ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জনগণের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতাকে ক্ষেত্রবিশেষে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে আদৌ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব কি না, কোনো কোনো মহল থেকে এমন প্রশ্ন উপস্থাপন বিচ্ছিন্ন বক্তব্য হিসেবে দেখার আজ আর সুযোগ নেই। সরকারের সম্ভাব্য প্রতিশ্রুত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে কেউ সময়ক্ষেপ করতে চাইছে কি না এ ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আমি গণতন্ত্রকামী মানুষ, গণতান্ত্রিক ও আন্দোলনরত দলগুলোর সবার প্রতি আহবান জানাই।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা, রাষ্ট্রের অপব্যবহার কিংবা প্রশাসনের কূটকৌশলের পরিবর্তে কারো রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের মাধ্যম হওয়া দরকার জনগণের রায়, আস্থা ও বিশ্বাস। মানুষের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন করা না গেলে কোনো আয়োজনই কোনো কাজে আসবে না, টেকসই হবে না। ’

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরো স্বচ্ছ ও সাহসী ভূমিকা পালন করতে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ সরকারের পাশে থাকবে বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য সরকারকে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।

তারেক রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনের জন্য সামনের নির্বাচনের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের কোনো আবেগতাড়িত কিংবা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ভবিষ্যতে আর যাতে কোনো চরমপন্থা কিংবা ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়, এর জন্য দেশবাসীকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ’

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানে আরো সমৃদ্ধ হতে হবে। শুধু স্লোগাননির্ভর কিংবা প্রচলিত প্রথাগত রাজনৈতিক সংস্কৃতি দিয়ে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের শহীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।


বক্তব্যের শুরুতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের ফ্যাসিস্ট পতন আন্দোলন যাতে কোনো একক দলের রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিচিতি না পায়, সেটি ছিল রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। ’

তিনি বলেন, ‘শহীদদের রাষ্ট্র গঠনের পূর্বশর্ত হচ্ছে বাংলাদেশে জনগণের সরাসরি ভোটে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা। আর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ফ্যাসিবাদের কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ ও চর্চার কোনো বিকল্প নেই। ’

আলোচনাসভায় একজন জুলাই শহীদের মায়ের বক্তব্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম মিথিলের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, বিএনপির জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহবায়ক রুহুল কবীর রিজভী, সদস্যসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আব্দুল হান্নান চৌধুরী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু হোরায়রা, গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, ইমতিয়াজ আহমেদ আবির, সাজ্জাদ হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন সজলের স্বজনরা, গণ-অভ্যুত্থানে আহত আল মিরাজসহ অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির নেতারা বক্তব্য দেন।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।