ঢাকা, বুধবার, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

১২শ ইট উল্টে পারিশ্রমিক মেলে ১০ টাকা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:৪৯, মার্চ ৮, ২০২০
১২শ ইট উল্টে পারিশ্রমিক মেলে ১০ টাকা!

গাইবান্ধা: নিষিদ্ধ হলেও গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ইট ভাটায় চলছে শিশুশ্রম। সেখানে রৌদে শুকানোর জন্য ১২শ ইট উল্টে দেওয়ার পর কোমলমতি প্রতি শিশুর পারিশ্রমিক মেলে মাত্র ১০ টাকা।

উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বদলাগাড়ী গ্রামের রুবেল ফরহাদের এইচআরবি ইটভাটায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, ইটভাটার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে কাদামাটির তৈরি কাচা ইট ফেলে রাখা হয়েছে রৌদে শুকানোর জন্য।

এরমধ্যে প্রতিটি লাইনে ২০০ করে ছয়টি লাইনে ইট সাজানো রয়েছে ১২শ। এসব কাচা ইট দুই পাশ উল্টে রৌদে শুকানোর জন্য নিয়োগ করা হয়েছে কোমলমতি শিশুদের। সেখানে শিশুরা ১২শ ইট উল্টে দেওয়ার পর পারিশ্রমিক পায় মাত্র ১০ টাকা।

কথা হয় ওই ইটভাটার শিশু শ্রমিক বদলাগাড়ী গ্রামের দেলবার মিয়ার ছেলে সাজ্জাদের সঙ্গে। সাজ্জাদ বাংলানিউজকে জানায়, বদলাগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। প্রতিদিন দুপুর ১২টায় ক্লাস ছুটির পর ইট ভাটায় কাজে যোগ দেয় শিশুটি। সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে সে পারিশ্রমিক পায় মাত্র ৪০-৫০ টাকা। রাতে বাড়ি ফিরে পারিশ্রমিকের এ টাকা মায়ের হাতে তুলে দেয় সাজ্জাদ।  

সাজ্জাদ আরও জানায়, তার বাবা পেশায় একজন কাঠুরিয়া। বিভিন্ন খড়ির আড়তে কুড়াল দিয়ে কাঠ চিড়ে যা পায় তা দিয়ে সংসার চলে তাদের। সংসারে মা ছাড়াও তার এক বোন রয়েছে।  

ইটভাটার আরেক শিশু শ্রমিক একই বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্র নিরব বাংলানিউজকে জানায়, তার বাবা পেশায় একজন ভ্যানচালক। সেও স্কুলছুটির পর অন্য শিশুদের সঙ্গে ইটভাটায় কাজ করে। বাড়িতে তার মা ছাড়াও এক বোন ও দুই ভাই রয়েছে।

ওই গ্রামের এনামুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে জানান, কোমলমতি এসব শিশুদের দিয়ে ১০ টাকার বিনিময়ে ১২শ ইট উল্টিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সত্যিই অমানবিক।

ইট ভাটায় শিশুদের দিয়ে কেন কাজ করানোর হয় এ বিষয়ে জানতে ভাটার ম্যানেজার বা মালিকের সঙ্গে যোগোযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।  

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নবী নেওয়াজ বাংলানিউজকে জানান, শিশুশ্রম আইনত নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।