মঙ্গলবার ( ৭ মে) নগরীর দক্ষিণ সুরমা ফলের আড়তে দুইটি দোকান থেকে প্রায় ১০ বছর পুরনো ৪০৫ বস্তা পচা খেজুর জব্দ করে ধ্বংস করে র্যাব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। পরে খেজুরের বস্তাগুলো নিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া হয়।

অভিযানে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ও বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ থেকে ৪০৫ বস্তা ১২ হাজার ৫৫৫ কেজি বা সাড়ে ১২টন পচা খেজুর জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। এর মধ্যে ৩৭৫ বস্তা খেজুর হানিফ এন্টারপ্রাইজ থেকে এবং বাকিগুলো বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ থেকে জব্দ করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর থাকায় আনিশা ফ্রুটকে ৫০ হাজার, পচা মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর বিক্রির দায়ে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ৫০ হাজার ও বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৯ এর সহকারী পরিচালক (এএসপি) সত্যজিত কুমার ঘোষ।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, চোখে না দেখলে বোঝানো কঠিন কতটুকু খারাপ খেজুর ধ্বংস করা হয়েছে। সময়মতো অভিযান না হলে হয়তো এই খেজুর বাজারে ছড়িয়ে যেতো। এটি হয়তো ৮/১০ বছর আগের খেজুর হতে পারে। খেজুরগুলোতে ছত্রাক পড়েছে, উপরের খোসা কালচে হয়ে পড়ে যাচ্ছে। ভেতরে পোকা ধরেছে।
তিনি বলেন, পচে যাওয়া এই খেজুর মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, তা বোঝানো কঠিন। ক্যান্সার কোষ কিন্তু সবার শরীরেই আছে। এগুলো অনুকূল পরিবেশ পেলে জেগে উঠবে। অথচ মানুষ পুষ্টি গুণের ইফতারের অনুসঙ্গ হিসেবে খেজুর কিনে নেয়।
সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায় বাংলানিউজকে বলেন, শুধু খেজুরই নয়, ফরমালিনযুক্ত ফলমূল কিংবা পচা বাসি যেকোনো খাবারই জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, খাদ্য ও ফলমূলে ভেজাল মেশানোর বিষয়টি সবারই পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে মানুষকে সচেতন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।
তিনি বলেন, খোলা বাজারে বিক্রি করা কোনো খেজুরই খাবার উপযোগ নয়, এরপরও আমরা কিনে খাচ্ছি।
পচা খেজুর সাড়ে ১২টন খেজুর উদ্ধারের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, প্রিজারভেটিভ না থাকার কারণেই খেজুরগুলো পচে গেছে। এসব পচা খেজুর খাওয়া মাত্র মানবদেহে থাকা রোগ জীবানুগুলো জাগ্রত হয়ে উঠবে। খাদ্যপণ্য ভেজাল মুক্ত রাখতে অন্তত ব্যবসায়ীদের সততার পরিচয় দেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
এনইউ/এএটি