শুক্রবার বিকেলে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সর্বশেষ অবস্থা ও প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
শাহ কামাল বলেন, সকাল ১০টা থেকে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ নেভি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি ও স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা একযোগে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। সকাল ১০টা থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৪ হাজার ২৫০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে খুলনায় এক লাখ, সাতক্ষীরায় ১২ হাজার, বাগেরহাটে ৪০ হাজার, পিরোজপুরে ৬ হাজার, বরগুনায় ৮০ হাজার, পটুয়াখালীতে ৩৭ হাজার ৫০০, বরিশালে ৫ হাজার, ভোলায় ৩৫ হাজার, নোয়াখালীতে ১৫ হাজার, লক্ষ্মীপুরে ১২ হাজার, ফেনীতে ৫ হাজার, চট্টগ্রামে ২০ হাজার, কক্সবাজারে এক হাজার, ঝালকাঠিতে ১০ হাজার, চাঁদপুরে ৫ হাজার, শরীয়তপুরে ৮ হাজার, মাদারীপুরে ৪ হাজার।
তিনি বলেন, যারা ঝুঁকিতে আছে তাদের ২১ থেকে ২৫ লাখ লোককে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৪ হাজার ৭১টি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আজকাল গ্রামাঞ্চলে পোক্ত বাড়িঘর ও বহু প্রাইমারি স্কুলে দালান উঠে গেছে। সে কারণে সবাই আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে না। সবাই যে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসবে তা নয়। সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমাদের প্রথম লক্ষ্য হল আমরা জীবনের কোনো ক্ষতি হতে দেব না। এজন্য আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সন্ধ্যার আগে সব মানুষকে নিয়ে আসা হবে। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি যতটা সম্ভব গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সহ প্রাণীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য।
আশ্রয় কেন্দ্রে আনার বিষয়ে প্রতিবন্ধী ও গর্ভবর্তী নারীদেরও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে সুপেয় পানি ও খাবারের কোনো সমস্যা হবে না। আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক প্যাকেট শুকনো খাবার একটি পরিবার ৭ দিন থাকতে পারবে। সেই রকম ৪১ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট আমরা পাঠিয়েছি। ডিসিদের নগদ ১০ লাখ টাকা করে দেয়া আছে। যেকোনো প্রয়োজনে খরচ করতে পারবেন তারা।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। আমরা জেনেছি মানুষ এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে। তাই আমরা মনে করি আমরা একটি জীবনও হারাবো না।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, আমাদের ওপর যে ঝুঁকি সেটাকে খাটো করে দেখা সমীচীন হবে না। জনগণকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে সাইক্লোনটিকে নিতে হবে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, উপকূলের লোকজনকে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা সার্বিকভাবে প্রস্তুত আছি। স্বাস্থ্য বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগসহ যেসব বিভাগের উপর ঝুঁকি আসতে পারে তারা সবাই কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এমএ