ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

অভিবাসীদের পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করতে কাজ করছে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫১, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
অভিবাসীদের পদ্ধতিগত জটিলতা দূর করতে কাজ করছে সরকার অভিবাসন ও সোনার বাংলা সম্মিলনে আগত অতিথিরা

ঢাকা: অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং পদ্ধতিগত জটিলতাগুলো দূর করতে সরকার কাজ করছে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত তার পেছনে অভিবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে শ্রমিকরা বিশেষ করে নারী শ্রমিকরা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

 

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সম্মিলনে তিনি একথা বলেন।

রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) আয়োজিত সম্মিলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এছাড়া রামরুর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সি আর আবরার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ প্রকল্পের দলনেতা জেরি ফক্স বক্তব্য রাখেন।  

সম্মিলনে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল অংশ নেয়। অভিবাসন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ১৮ জনকে সোনার মানুষ সম্মাননা দেওয়া হয়।

বক্তারা বলেন, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, এ খাতে সার্বিক সুশাসন নিশ্চিত করা, ২০২০-২৯ সালকে অভিবাসন দশক ঘোষণা এবং সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে অভিবাসন ও সোনার মানুষ সম্মিলন।

সম্মিলনের বিভিন্ন পর্বে বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৭ লক্ষ্যের মধ্যে ১১টিই কোনো না কোনোভাবে অভিবাসীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ভূমিকার উপর আলোকপাত করে তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু বাজার হারানো, একমুখি বা একই দেশে বা অঞ্চলে অভিবাসনপ্রবণতা, অবৈধ অভিবাসন, রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব, ওয়েজ আর্নার তহবিলের অস্বচ্ছ ব্যবহার ইত্যাদি উপাদানগুলো অভিবাসন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর উদ্যোগসহ অভিবাসীদের সুযোগ-সুবিধাগুলোর প্রতি আরো বেশি আন্তরিকতা প্রদর্শন করলে দেশের অভিবাসন খাত আরও বিকশিত হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।  

অভিবাসীদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখে উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, এ খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। অভিবাসনপ্রক্রিয়া এখনো মূলত ঢাকা কেন্দ্রিক, এটার পুরোপুরি বিকেন্দ্রীকরণ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অধিকাংশ অভিবাসীই ব্যক্তি পর্যায়ে বা দালালদের মাধ্যমে বিদেশ যান। দালালদের আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হলে অভিবাসন খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

সকালে উদ্বোধনীপর্বে বক্তব্য রাখেন রামরুর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী। আরও বক্তব্য রাখেন কবি ড. আশরাফ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান। এ পর্বের শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

এরপর অভিবাসন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ শীর্ষক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।  

শ্রম, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সেলিম রেজার সভাপতিত্বে এতে আলোচনা করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. সালিমুল হক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।  

এছাড়া বিকেলে অভিবাসন বিষয়ক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পার্লামেন্টারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেয়। এ পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্লামেন্টারি ককাস অন মাইগ্রেশনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বায়রা’র সভাপতি বেনজির আহমেদ এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। পরে তাসনিম সিদ্দিকী ও সি আর আবরারের গবেষণাগ্রন্থ ‘টুয়ার্ডস ট্রান্সপারেন্সি ইন রিক্র্যুটমেন্ট: মেকিং দালাল্স ভিজিবল’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
জিসিজি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।